বেদ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বেদ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১

বিস্ময়কর ব্যাখ্যা : ন তস্য প্রতিমা অস্তি






শুক্লযজুর্বেদের “ন তস্য প্রতিমা অস্তি” এই শ্রুতি বাক্যটুকু সকলের পরিচিত ৷ এই শ্রুতি বাক্যটুকু দিয়েই দয়ানন্দ সরস্বতী, রাজা রামমোহন রায় প্রভৃতি মূর্তিপূজা বিরোধীরা মূর্তিপূজার বিরোধীতা করেছিলেন ৷ অপরপক্ষে সনাতনধর্মাবলম্বী পণ্ডিতগণ এই শ্রুতি বাক্যকে মূর্তিপূজার বিরোধী মনে করেন না ৷ কারণ প্রতিমা শব্দের অর্থ কেবল মূর্তি বা প্রতিকৃতিই নয়, প্রতিমা অর্থ তুলনা, সাদৃশ্য ইত্যাদি অর্থও রয়েছে ৷ সুতরাং “ন তস্য প্রতিমা অস্তি” অর্থ তাঁর তুলনার পাত্র বা সাদৃশ্যমান কেউ নাই ৷ 

যাহোক না কেন, বস্তুত দয়ানন্দ সরস্বতী, রাজা রামমোহন রায়, হযরত মুহাম্মদ প্রভৃতি যত ছিরুই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করুক না কেন, সনাতনধর্ম থেকে প্রতিমা পূজার উচ্ছেদ কেউ কোনদিন করতে পারবে না ৷ 

এখন আসি মূল প্রসঙ্গে ৷ উপর্যুক্ত ব্যাখ্যা ছাড়াও ঐ শ্রুতিবাক্যের একটি বিস্ময়কর ব্যাখ্যা পেয়েছি, সেটিই বলব ৷ সাধারণ প্রচলিত ব্যাখ্যাগুলোতে “ন” আর “তস্য” শব্দ দুটিকে দুটি ভিন্ন পদ মানা হয় ৷ কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাখ্যাটি যিনি দিয়েছেন, তাঁর নাম বলতে আমি অনিচ্ছুক, তিনি মনে করেন “ন” আর “তস্য” দুটি ভিন্ন পদ নয়; মূলত এখানে একটি পদ, অর্থাৎ এরূপ “নতস্য” ৷ এখানে ‘নত’ শব্দের সাথে ষষ্ঠী বিভক্তি প্রয়োগে ‘নতস্য’ হয়েছে ৷ 

তাহলে “নতস্য প্রতিমা অস্তি” এর অর্থ হচ্ছে--

 নতস্য= ‘নত’ এর অর্থাৎ নতজানু ; প্রতিমা= মূর্তি ; অস্তি= আছে ৷ পরমেশ্বর রাম-কৃষ্ণ প্রভৃতি রূপে শিশুকালে নতজানু হয়ে হামাগুড়ি দিয়ে লীলা করেছেন, সেই নতজানু হামাগুড়িরূপে পরমেশ্বরের প্রতিমা জগতে বিদ্যমান রয়েছে --এই অর্থ ৷ 



 

ব্যাখ্যাটি আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লেগেছে, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম ৷ আপনাদের কেমন লাগল, মতামত জানান ৷ ধন্যবাদ ৷ 

//ওঁ শ্রীকৃষ্ণার্পণমস্তু //

বুধবার, ১৭ মার্চ, ২০২১

স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী কৃত মনগড়া ভাষ্য খণ্ডন Counter Reply সহ

 


আয়ং গৌঃ পৃশ্নিরক্রমীদসন্ মাতরং পুরঃ।
পিতরং চ প্রযন্তস্বঃ ।। (শুক্লযজুর্বেদ ৩/৬)
ঋষ্যাদি— ওঁআয়ংগৌরিতি সর্পরাজ্ঞীকদ্রূর্ঋষিঃ ৷ গায়ত্রী ছন্দঃ ৷ অগ্নিদেবতা ৷ গার্হপত্যাহবনীয়দক্ষিণাগ্নিস্থাপনে বিনিয়োগ ৷
(এই মন্ত্রের ঋষি- সর্পরাজ্ঞী ৷ ছন্দ- গায়ত্রী ৷ দেবতা- অগ্নি ৷ গার্হপত্য, আহবনীয় ও দক্ষিণাগ্নি স্থাপনে এই মন্ত্রের বিনিয়োগ)
.
মন্ত্রার্থ— (অয়ম্) এই দৃশ্যমান অগ্নি (গৌঃ) যজ্ঞনিষ্পত্তির নিমিত্ত যজমানের গৃহে গমনশীল, (পৃশ্নিঃ) লোহিত, শ্বেত, পীত প্রভৃতি বর্ণের শিখাযুক্ত হয়ে () সর্ব প্রকারে অর্থাৎ আহবনীয়, গার্হপত্য ও দক্ষিণাগ্নি স্থানে (অক্রমীৎ) পাদবিক্ষেপ করে ; (পুরঃ) পূর্ব দিকে (মাতরম্) মাতৃরূপা পৃথিবীকে (অসদৎ) প্রাপ্ত করে, (স্বঃ) সূর্যরূপে (প্রয়ন্) সঞ্চরণ করে (পিতরঞ্চ) পিতারূপ দ্যুলোককে (অসদৎ) প্রাপ্ত করে ৷
.
প্রমাণ— ‘স্বঃ আদিত্যো ভবতি’ (নিরুঃ ২৷১৪)
‘দ্যৌর্নঃ পিতা ... মাতা পৃথিবী’ (অথর্ববেদ ৯৷১০৷১২)
.
দয়ানন্দ কৃত মনগড়া ব্যাখ্যা— (অয়ম্) এই প্রত্যক্ষ (গৌঃ) গোলরূপী পৃথিবী (পিতরম্) পালনকারী (স্বঃ) সূর্যলোককে (পুরঃ) আগে আগে (মাতরম্) নিজের যোনিরূপ জলের সাথে বর্তমান হয়ে (প্রয়ন্) প্রকৃষ্টভাবে চলতে থেকে (পৃশ্নিঃ) অন্তরিক্ষে (অক্রমীৎ) চারিদিকে ঘুরতে থাকে ৷
.
দয়ানন্দের ব্যাখার সমালোচনা—
i) মন্ত্রটির দেবতা অগ্নি, তাই মন্ত্রের ‘অয়ম্’ পদে অগ্নিই নির্দেশিত হওয়া উচিত ৷ কিন্তু দয়ানন্দ ‘অয়ম্’ পদটি পৃথিবী নির্দেশার্থ ব্যবহার করেছে, আর মন্ত্রটির দেবতা অগ্নি হওয়া সত্ত্বেও দয়ানন্দের কৃত মূল ব্যাখ্যাতে অগ্নির কোন প্রসঙ্গই নাই ৷
ii) এই মন্ত্রের বিনিয়োগ গার্হপত্য, আহবনীয় ও দক্ষিণাগ্নি স্থাপনে, অথচ দয়ানন্দের ব্যাখ্যাতে বিনিয়োগাদির বিন্দুমাত্র উল্লেখ নাই ৷ যজুর্বেদ যজ্ঞ সম্পাদনের নিমিত্ত, তাই দয়ানন্দের ভাষ্যে যজ্ঞের কোন বিধি-বিধান ও বিনিয়োগের উল্লেখ না থাকায়, উহা ভাষ্যের নামে কেবল ফাঁজলামি মাত্র ৷ সুতরাং উহা তা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাজ্য ৷
iii) দয়ানন্দ ‘গৌঃ’ অর্থ গোলরূপী পৃথিবী লিখে, পৃথিবীকে গতিশীল সিদ্ধ করেছে ৷ কিন্তু নিঘুণ্টে গৌঃ শব্দ পৃথিবীর নাম হিসেবে পঠিত হলেও নিরুক্তকার যাস্ক অন্তরিক্ষে গতিশীল বোঝাতে গৌঃ শব্দটি পৃথিবী অর্থে ব্যবহার না করে বরং সূর্য অর্থেই ব্যবহার করেছেন ৷ প্রমাণ - “গৌঃ আদিত্যো ভবতি ৷ গময়তি রসান্, গচ্ছতি অন্তরিক্ষে” (নিরুক্ত ২.১৪) ৷ আবার মন্ত্রে যে ‘পৃশ্নিঃ’ শব্দটি আছে তাও সূর্যেরই বোধক ৷ প্রমাণ- “পৃশ্নিঃ আদিত্যো ভবতি ৷ প্রাশ্নুতে এনং বর্ণঃ ইতি নৈরুক্তা” (নিরুক্ত ২.১৪)৷ বিচিত্র বর্ণ অগ্নিই সূর্যরূপে অন্তরীক্ষে গমন করে ৷ সুতরাং দয়ানন্দ যে পৃথিবীর গতিশীলপক্ষে মন্ত্রের ভাষ্য তা সম্পূর্ণ তার মনগড়া, পাশ্চাত্য দেশের বিজ্ঞানের তথ্য সে বেদমধ্যে ঢুকিয়েছে মাত্র, এরকম সে ঋগ্বেদে (১৷১১৯৷১০) টেলিগ্রাফের কথা ঢুকিয়েছে 🐸 ৷ আবার সে বলে যে, সূর্যে নাকি মানুষ বাস করে 🐸


 বেদের যা মূল অর্থ তা-ই বলা উচিত, নাকি নিজের ইচ্ছামতো যেটা ইচ্ছা সেটা বেদের নাম দিয়ে বেদের মুখ দিয়ে বলানো উচিত? স্বয়ং বিচার করুন ৷
[দয়ানন্দ এরূপ বেদের মনগড়া ব্যাখ্যা করে বেদের মর্যাদা হানি করেছে, তাই দয়ানন্দের অপব্যাখ্যার খণ্ডন জরুরী, এজন্যই বাংলাতে খুব শীঘ্র করপাত্রী মহারাজ কৃত দয়ানন্দের ভাষ্য খণ্ডনসহ যজুর্বেদ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে]
 
......................................................................................................................................
 আমার এই পোস্টের বিরুদ্ধে দয়ানন্দীরা যে পোস্ট লিখেছে তা খণ্ডনসহ দেওয়া হলো-

 
যজুর্বেদ ৩/৬ এর সংস্কৃত ভাষ্যে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী সমস্তকিছুর Reference দিয়েছেন কোন শব্দের অর্থ কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু করপাত্রীর মত ভন্ডদের সেগুলো সমস্তকিছু যথাযথভাবে তুলে ধরে তথাকথিত মহাখন্ডনের সৎসাহসটুকুই নেই। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী যজুর্বেদ৩/৬ এর বৈদিক সংস্কৃত থেকে লৌকিক সংস্কৃততে যেই ভাষ্য করেছেন তার বঙ্গানুবাদ করলে হয়, 
★आयं गौः पृश्नि॑रक्रमी॒दस॑दन् मा॒तरं॑ पु॒रः। पि॒तरं॑ च प्र॒यन्त्स्वः॑॥ 
আয়ং গৌঃ পৃশ্নিরক্রমীদসদন মাতরং পুরঃ। পিতরং চ প্রয়তস্বঃ।। -[যজুর্বেদ ৩।৬] 
পদার্থ- (অয়ং) এই প্রত্যক্ষ (গৌ) পৃথিবী [নির্ঘণ্ট১.১,নিরুক্ত২.৫] (মাতরং) নিজ মাতৃরূপ জল সহিত বর্তমান হয়ে (পৃশ্মি) অন্তরীক্ষে [অষ্টাধ্যায়ী ৭.১.৩৯,নির্ঘণ্ট ১.৪] (অসদত) স্বকক্ষে (প্রয়ন) উত্তম প্রকারে চলছে এবং (পিতরং) পালনকারী (স্বঃ) সূর্যলোকের [নিরুক্ত ২/১৪] (পুরঃ) আগে (আক্রমীত) চারপাশে ঘুরছে। 
এখন আপনারা সকলেই জানেন ভাগবতপুরাণ স্পষ্টতই সূর্যের পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এখন কিছু মানসিক বিকৃতিগ্রস্ত কুলাঙ্গার পুরাণের এই কুসংস্কারের সাথে বেদকে মেলানোর হাস্যকর প্রচেষ্টা করছে। এইসব জোকারগুলো হচ্ছে করপাত্রী নামে এক ভন্ড ও তার অনুসারীগণ। এখন দেখি এই জোকারগুলো বেদকে ভাগবতপুরাণের সাথে মেলানোর কি কি অপচেষ্টা করেছে। 
১) প্রথমে "গৌ" শব্দ নিয়ে এই ব্যাক্তি কি বলল নীজেও বুঝেছে কিনা আমার সন্দেহ রয়েছে। মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী "গৌ" শব্দের অর্থ পৃথিবী নিয়েছেন। এখন গৌ অর্থ যে পৃথিবী সেই বিষয়ে তিনি নিরুক্ত ও নির্ঘণ্ট উভয় থেকেই তার সংস্কৃত ভাষ্যে প্রমাণ দিয়েছেন। যেমন, ★ गौरिति पृथिव्या नामधेयम्। यद् दूरं गता भवति। यच्चास्यां भूतानि गच्छन्ति -[निरु॰२.५] অর্থ - পৃথিবীর নাম গৌ। কেননা, এটি দূর - দূর পর্যন্ত গমন করে। অথছ, করপাত্রী লিখল নিরুক্তে নাকি গৌ অর্থ পৃথিবী বলাই হয়নি। কতটা শিশুসুলভ মানসিকতার অধিকারী হলে এভাবে নীজেকে হাসির পাত্র বানাতে পারে কেউ! এখন করপাত্রী "গৌ" শব্দের অর্থ বের করল, " যজ্ঞনিষ্পত্তির নিমিত্ত যজমানের গৃহে গমনশীল " গৌ শব্দের বেদাঙ্গসিদ্ধ পৃথিবী অর্থকে খুবই দুর্বল মিথ্যাচারের মাধ্যমে অস্বীকার করে তিনি এর এতবড় মনগড়া অর্থ আবিষ্কার করল ভালো কথা। ত এই অর্থইবা নিরুক্তে কোথায় আছে একটু দেখান? না, এইবিষয়ে করপাত্রীজি সম্পূর্ণ চুপ। সে যাই হোক, গৌ শব্দের আরো বিভিন্ন অর্থ হয় এটা সঠিক। এখন মহর্ষি তার মধ্যে পৃথিবী অর্থটি নিলেন। তাতে ভুলটা কি হল? 
 
 Counter Reply: গাঁজাখোর, রমাবাঈের প্রেমিক পুরুষ ও সেক্সটনিকধারী দয়ানন্দের শিষ্য লিখেছে যে, “অথছ, করপাত্রী লিখল নিরুক্তে নাকি গৌ অর্থ পৃথিবী বলাই হয়নি।” এটি ডাহা মিথ্যা কথা, জন্মগত মিথ্যাবাদীদের কাছ থেকে মিথ্যাই আশা করা যায়, সত্য নয় ৷ আমার পোস্টে স্পষ্টই লেখা ছিল যে, "কিন্তু নিঘুণ্টে গৌঃ শব্দ পৃথিবীর নাম হিসেবে পঠিত হলেও নিরুক্তকার যাস্ক অন্তরীক্ষে গতিশীল বোঝাতে গৌঃ শব্দটি পৃথিবী অর্থে ব্যবহার না করে বরং সূর্য অর্থেই ব্যবহার করেছেন ৷ প্রমাণ - “গৌঃ আদিত্যো ভবতি ৷ গময়তি রসান্, গচ্ছতি অন্তরিক্ষে” (নিরুক্ত ২.১৪) ৷” সূর্যের নামও গৌঃ, আবার পৃথিবীর নামও গৌঃ ৷ কিন্তু মহর্ষি যাস্ক সূর্যেকেই অন্তরীক্ষে গমনশীল বলেছেন, পৃথিবীকে নয় ৷ পৃথিবীর নাম গৌঃ কেন, সে সম্বন্ধে বলেছেন- गौरिति पृथिव्या नामधेयम्। यद् दूरं गता भवति। यच्चास्यां भूतानि गच्छन्ति -[निरु॰२.५] অর্থঃ পৃথিবী দূর গতা বলে বা এর মধ্যে প্রাণীসমূহ গমন করে বলে, পৃথিবীর নাম গৌঃ ৷ পৃথিবীর দূর গতা অর্থ পৃথিবী দূর-দূরান্ত ব্যাপী ৷ পৃথিবীর মধ্যে প্রাণীসমূহ দূর থেকে সুদূরে গমানাগমন করে, তাই পৃথিবীর নাম গৌঃ ৷ মহর্ষি যাস্ক কিন্তু পৃথিবীকে অন্তরীক্ষে গমনকারী বলেন নাই, তাই দয়ানন্দ যে পৃথিবীকে অন্তরীক্ষে গমনশীল বলেছেন তা প্রামণহীন ৷ আর গৌঃ শব্দটি √গাম্ ধাতু থেকে এসেছে যার অর্থ গমন ৷ যেহেতু মন্ত্রটির দেবতা অগ্নি, তাই গৌঃ অর্থে যজ্ঞনিষ্পত্তির জন্য যজমানের গৃহে গমনশীল---এই অর্থই সমুচিত ৷ 
 
২) করপাত্রীজি বললেন, পৃশ্নি নাকি এখানে সূর্যসূচক। অথছ, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী পাণিনি অষ্টাধ্যায়ী ও নির্ঘণ্ট উভয় থেকেই তার ভাষ্যে প্রমাণ দেখিয়েছেন যে পৃশ্নি অর্থ " অন্তরিক্ষ " হয়। যেমন, ★अन्तरिक्षे। अत्र सुपां सुलुग्॰ [अष्टा॰७.१.३९] ★इति सप्तम्येकवचने प्रथमैकवचनम्। पृश्निरिति साधारणनामसु पठितम्। [निघं॰१.४] মহর্ষির দেওয়া এই স্পষ্টত বেদাঙ্গপ্রমাণগুলোকে জনগণের সামনে তুলে ধরার মত সৎসাহসটুকুই এই শিশুর হলনা। 
 
Counter Reply: হাসাল মোর বালক! ওহে বালক, পৃশ্নিঃ অর্থ যখন অন্তরীক্ষ তখন, গৌঃ অর্থ সূর্য ধরলে না কেন? কারণ সূর্যই অন্তরীক্ষে গমন করে ৷ প্রমাণ - “গৌঃ আদিত্যো ভবতি ৷ গময়তি রসান্, গচ্ছতি অন্তরিক্ষে” (নিরুক্ত ২.১৪) ৷” আর নিঘুণ্টের শব্দগুলোরই ব্যাখ্যা রয়েছে নিরুক্তে ৷ তাই ওহে বালক, ব্যাখ্যাখানা একটু খুলে দেখ, গাঁজা খেয়ে দয়ানন্দের মতো মনগড়া ব্যাখ্যা করলে, গাঁজার নৌকা পাহাড় দিয়েই তো যাবে ☺৷ নিরুক্তে বলা হয়েছে- “পৃশ্নিঃ আদিত্যো ভবতি ৷ প্রাশ্নুতে এনং বর্ণঃ ইতি নৈরুক্তা” (নিরুক্ত ২.১৪)৷ এখানে স্পষ্টই আদিত্য অর্থাৎ সূর্যকেই পৃশ্নিঃ বলা হয়েছে, যেহেতু সূর্য সকল বর্ণ শোষণ করেন ৷ যেহেতু মন্ত্রটির দেবতা অগ্নি, তাই প্রাচীন ভাষ্যকারগণ পৃশ্নি অর্থ বিচিত্র বর্ণের শিখাযুক্ত অগ্নি করেছেন ৷ আবার অগ্নিই সূর্যরূপে অন্তরীক্ষে গমন করে ৷ সুতরাং প্রাচীন ভাষ্যকারগণ কৃত অর্থই সমীচিন, অর্বাচীন দয়ানন্দ কৃত অর্থ বানোয়াট ৷
 
 ৩) করপাত্রী আরেকটি দুর্বল মিথ্যাচার করল যে মন্ত্রের দেবতা অগ্নি। কিন্তু মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী নাকি অগ্নি নিয়ে তার ভাষ্যে কিছুই দেন নি। অথছ মহর্ষি তার ভাষ্যে ভাবানুবাদেই দিয়েছেন যে, " অগ্নি ও জলের নিমিত্ত হতে উৎপন্ন এই পৃথিবী " 
 
Counter Reply: এখানেও মিথ্যাবাদী দয়ানন্দের শিষ্যটি আমার পোস্টের তথ্য ভূলভাবে উপস্থাপন করেছে ৷ আমার পোস্টে বলা হয়েছিল যে, দয়ানন্দের কৃত “মন্ত্রের মূল ব্যাখ্যাতে” অগ্নির কোন প্রসঙ্গই নাই ৷ তা যখন মন্ত্রের মূল ব্যাখ্যাতেই অগ্নির কোন প্রসঙ্গ নাই, তখন দয়ানন্দ তার ভাবানুবাদে অগ্নির কথা ঢুকাল কি গাঁজা খেয়ে??? হয়ত বেচারা দয়ানন্দ ভয় পেয়েছিল, ভেবেছিল, মন্ত্রের দেবতা তো অগ্নি, কিন্তু আমি মন্ত্রটির যে ব্যাখ্যা বানালাম তাতে তো অগ্নির কোন স্থানই হলো না!! তাই চুপিসারে আমার নিজস্ব ভাবানুবাদে অগ্নির কথা ঢুকিয়ে দিই, নয়তো আমাকে লাথি-ঝাটা খেতে হতে পারে ৷ শুধু শুধু তো আর লোকজন আমার বক্তৃতাতে আমাকে জুতা-ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে না! ! 
 
৪) করপাত্রী "গৌ" শব্দের বেদাঙ্গসিদ্ধ অর্থ "পৃথিবী" অস্বীকার করে "মাতরং" শব্দের অর্থ নিয়ে নিল " মাতৃরূপ পৃথিবী "। এখন তার এই অর্থ নেওয়ার পেছনে যুক্তি দেখাল যে অথর্ববেদের একটি মন্ত্রে বলা আছে, দ্যুলোক হল পিতা , পৃথিবী হল মাতা। এই ব্যাক্তির যুক্তিগুলো যে ছোট্টবাচ্চাদের মত তার প্রমাণ পূর্বেই অনেক পাওয়া গিয়েছে। এখন আরো বেশি পাওয়া গেল। এভাবে অন্য কোন মন্ত্রে কাকে পিতা ও মাতা বলা হয়েছে সে অনুসারে যজুর্বেদ৩/৬ এর ভাষ্য হবে! এরকম বহু মন্ত্রেই বহুজনকে পিতা ও মাতা বলা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রে ঈশ্বরকে পিতা ও প্রকৃতিকে মাতা বলা হচ্ছে। (অথর্ববেদ ৭/৬/১) তে প্রকৃতিকে মাতা ও পিতা বলে সম্মোধন করা হচ্ছে। (ঋগ্বেদ ৮/৯৮/১১) তে পরমাত্মার উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে যে, " আপনিই আমাদের পিতা, আপনি মাতা " এখন করপাত্রী (অথর্ববেদ৭/৬/১) (ঋগ্বেদ৮/৯৮/১১) কিংবা অন্যান্য মন্ত্রগুলো অনুসারে যজুর্বেদ ৩/৬ এ মাতা - পিতা বলতে " প্রকৃতি ", "পরমাত্মা " বা অন্যান্য ব্যবহৃত শব্দগুলো নিলনা কেন? এই করপাত্রী যে কতবড় মিথ্যাচারী তার পরিচয় এখান থেকেই পাওয়া যায়। 
 
 Counter Reply: বালার্যদের এই পয়েন্টটি সবচেয়ে বেশি শিশুসুলভ ও হাস্যকর ৷ কারণ তারা যে প্রশ্ন তুলেছে, সেই একই প্রশ্ন দয়ানন্দের ভাষ্যের প্রতি এবার আমি তুলব ৷ তারা বলেছে, অথর্ববেদের এই মন্ত্রে দ্যুলোককে পিতা, ও পৃথিবীকে মাতা বলা হলেও তা নাকি শুক্লযজুর্বেদ ৩/৬ এর জন্য প্রযোজ্য নয় ৷ তাহলে, একইভাবে আমিও বলতে পারি যে, নিঘুণ্ট-নিরুক্তে গৌঃ অর্থ পৃথিবী হলেও তা শুক্লযজুর্বেদ ৩/৬ এর জন্য প্রযোজ্য নয় ৷ তারা আরও বলেছে যে, অন্যান্য মন্ত্রে পরমাত্মাকেই পিতা-মাতা বলা হয়েছে, আবার কোথাও পরমাত্মাকে পিতা, আবার প্রকৃতিকে মাতা বলা হয়েছে---এসব অর্থ কেন করপাত্রীজী শুক্লযজুর্বেদ ৩/৬ তে গ্রহণ করল না? একইভাবে, আমিও প্রশ্ন তুলতে পারি যে, নিরুক্তে তো সূর্যকেও গৌঃ বলা হয়েছে, আবার গৌঃ অর্থ গরুও হয়, তো এসব অর্থ কেন দয়ানন্দ শুক্লযজুর্বেদ ৩/৬ তে গ্রহণ করল না? শোন রে মহামূর্খগণ! কোথায় কোন শব্দের কোন অর্থ গ্রহণ করতে হয়, তার জন্য প্রকরণ জ্ঞান থাকা আবশ্যক, যা দয়ানন্দের কিঞ্চিৎ পরিমাণেও ছিল না ৷ যেমন- সৈন্ধবঃ নামে লবণ ও অশ্ব রয়েছে ৷ রান্নার সময়ে সৈন্ধব অর্থ লবণ, গমনের সময় অশ্ব বুঝতে হবে ৷ যদি কেউ রান্না প্রসঙ্গে সৈন্ধব অর্থ অশ্ব বোঝে, আর গমনের সময় লবণ বোঝে তবে সে মহামূর্থ ব্যতীত আর কি? দয়ানন্দ এইরূপ মহামূর্খ ছিল, তাই ছাগলটা প্রতিমা অর্থ তুলনা, সাদৃশ্য ইত্যাদি থাকতেও প্রকরণজ্ঞানহীনতার কারণে ‘ন তস্য প্রতিমা অস্তি’ মন্ত্রে প্রতিমা অর্থ মূর্তি ধরে প্রতিমাপূজার বিরোধীতা করেছিল ৷ এক অগ্নিই মাতৃরূপা পৃথিবীতে পার্থিব অগ্নিরূপে, অন্তরীক্ষে বিদ্যুতরূপে, পিতারূপী দ্যুলোকে সূর্যরূপে অবস্থান করে ৷ একারণে করপাত্রীজীর ভাষ্যই সঠিক, দয়ানন্দের ভাষ্য প্রকরণহীণ ভাবে প্রমাণাদির প্রয়োগ করায় তা ভ্রান্ত ৷ 
 
 ৪) এছাড়াও, এখানে দাবি করা হল যে মহর্ষি নাকি এভাবেই পাশ্চাত্য দেশের বিজ্ঞানের সাথে মেলাতে ঋগ্বেদ১/১১৯/১০ এ টেলিগ্রাফের কথা ঢুকিয়ে দিয়েছে। সত্য বিজ্ঞানের সাথে পাশ্চাত্য- দেশীয়র কি সম্পর্ক? তা উপলব্ধি করার মত সুস্থ মানসিকতস এদের নেই। তবুও এই গোয়ারদেরকে একটাই কথা বলব - টেলিগ্রাফির প্রযুক্তি পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানীরা অাবিষ্কার করেছিল নাকি ভারতীয় বাঙালি হিন্দু বিজ্ঞানী ড. জগদীশ চন্দ্র বসু করেছিল তা ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়ে পড়ে অাসুন। 
 
Counter Reply: দয়ানন্দ উল্লেখ করেছে তারওয়ালা টেলিগ্রাফের, আর জগদীশচন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছি তারবিহীন রেডিও বা ‘বেতার’ ৷ এ দুটোকে ঘুলিয়ে যে এক করে ফেলেছে, সেই মহামূর্খ নাদানটিরই কি ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হওয়া উচিত নয়?
 
৫)যজুর্বেদ ৩/৬ এ "গৌ" শব্দের বেদাঙ্গসিদ্ধ পৃথিবী অর্থ নিয়ে মিথ্যাচার করে সে নীজেকে যথেষ্ট হাসির পাত্র বানাল। কিন্তু বেদের অনেক মন্ত্রেই যে সরাসরি "পৃথিবী " শব্দ ব্যবহার করে পৃথিবীর গতিশীলতার বিষয়ে স্পষ্টত উল্লেখ অাছে। এই করপাত্রী সেগুলোরও সমীক্ষা করে নীজেকে আরেকটু হাসির পাত্র বানাল না কেন? 
★বীমে দ্যাবাপৃথিবী ইতো বি পন্থানো দিংশদিশম। -[অথর্ববেদ ৩।৩১।৪] 
অর্থ- (ইমে) এই (দ্যাবাপৃথিবী) সূর্য ও পৃথিবীলোক (বি ইত) বিশেষরূপে পৃথক পৃথক (পন্থান) মার্গে [আলাদা আলাদা কক্ষপথে] (দিংশ দিশম) ভিন্ন দুই দিশায় [ ভিন্ন গতিতে] ( বি=যন্তি) গতিশীল রয়েছে। 
 
 Counter Reply: যেমন দয়ানন্দের শুক্লযজুর্বেদ ৩/৬ মন্ত্রটির ব্যাখ্যা ভুল, তেমনি এই মন্ত্রটির প্রদত্ত অর্থও ভুল ৷ সম্পূর্ণ মন্ত্র ও সঠিক অর্থ - 
 
বীহ'মে দ্যাবাপৃথিবী ইতো বি পন্থনো দিশংদিশম্। 
ব্যহং সর্বেণ পাপ্মনা বি যক্ষ্মেণ সমায়ুষা ॥ [অথর্ববেদ ৩।৩১।৪]
যেমন (ইমে) এই (দ্যাবাপৃথিবী) আকাশ ও পৃথিবী (বি ইতঃ) স্বভাবতঃ পৃথক পৃথক হয়ে থাকে, আর (দিশংদিশম্) এক দি হতে অপর দিকে গমনের (পন্থানঃ) পথসমূহ  (বি) যেমন পৃথক-পৃথক হয়ে থাকে, তেমনই এই বালককেও (অহং) আমি (সর্বেণ পাপ্মনা বি) স্বভাবতঃ সকল পাপ হতে বিযুক্ত হয়ে অবস্থানশালী করে দিচ্ছি। (যক্ষ্মেণ বি) যক্ষ্মা রোগ হতে বিযুক্ত করে একে (আয়ুষা সম্‌) দীর্ঘ আয়ুষ্মত্তা প্রদান করছি।
 উল্লেখ্য যে, আর্যসমাজী হরিশরণ, তুলসীরাম শর্মার অনুবাদও একই প্রকার ।
পরিশেষে, এই করপাত্রী একজন অদ্বৈতবাদী - মায়াবাদী তথাকথিত ধর্মগুরু। অন্যদিকে তার শিশুসুলভ ভাষ্য থেকে কপি মেরে পোস্ট করেছে সে একজন খাঁটি বৈষ্ণব। কিন্তু বৈষ্ণবমত হল আর্যসমাজের মতই কঠোরভাবে অদ্বৈতবাদের বিরোধী। স্বয়ং চৈতন্য মহাপ্রভু শাস্ত্রের অদ্বৈতবাদী-মায়াবাদী ভাষ্য পড়লে সর্বনাশ হয় বলেছেন(চৈ.চ, মধ্যলীলা ৬/১৬৯)
 
Counter Reply: যদিও আমি নিজেকে বৈষ্ণব বলে দাবি করি না, কারণ সে পর্যায়ে আমি এখনো উঠিনি, তবুও দয়ানন্দীটি আমাকে খাঁটি বৈষ্ণব বলায় বেশ প্রীত হলাম ৷ শোন রে দয়ানন্দী, বৈষ্ণবগণ ‘বাদ’কে অমান্য করতে পারেন, কিন্তু ব্যক্তিটিকে তারা অশ্রদ্ধা করেনা ৷ গীতা-ভাগবতের টীকাকার শ্রীধর স্বামি ছিলেন অদ্বৈতবাদী, তিনি অদ্বৈবাদী হলেও ভক্তিবাদী ছিলেন এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ তাঁকে যার পর নাই মান্য করেন ৷ তেমনিই করপাত্রী মহারাজও একজন ভক্তিবাদী ভাগবত মহাপুরুষ ৷ ভাগবতের ওপর লেখা তাঁর গ্রন্থও রয়েছে, যথা- ভাগবত সুধা, ভ্রমর গীতা ইত্যাদি ৷ আর তিনি যজুর্বেদের যা মূল অর্থ তাই-ই ব্যক্ত করেছেন, তিনি তাঁর নিজ মত দয়ানন্দের মতো বেদের মধ্যে ঢুকাননি যে তা পড়লে সর্বনাশ হবে ৷ 
 
এইরূপে প্রতিপাদিত হলো যে, দয়ানন্দীরা দয়ানন্দের ভুল ব্যাখ্যাকে ঢাকতে যতই কুপ্রচেষ্টা, গুজামিল তথ্য দিক না কেন তা সকলই মিথ্যা ৷
 
।। ওঁ শ্রীকৃষ্ণার্পণমস্তু ।।

শুক্রবার, ২ মার্চ, ২০১৮

বৈদিক ঋষির ঈশ্বর দর্শন


জগতের স্রষ্টা বলে কি কেউ আদৌ আছেন? যদি থাকেন, তবে সেই জগদীশ্বর শ্রীভগবানকে কি দর্শন করা যায়? কেউ কি তাঁকে প্রত্যক্ষ করেছে? নতুবা এ কেবলই অন্ধবিশ্বাস?
বৈদিক সনাতন ধর্ম অন্ধবিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়, বেদদ্রষ্টা ঋষিগণ পরমেশ্বরের সাক্ষাৎ প্রাপ্ত হয়েছিলেন ৷ ভগবদ্ভক্ত সাধক ভগবানের দর্শন প্রাপ্ত হন, ইহা নিত্য সত্য ব্যাপার ৷ ইহার দৃষ্টান্ত তাই বেদে দেখতে পাই —

“নেম ঋষি বলেন, ইন্দ্র নামে কেউ নেই! কে তাকে দেখেছে? আমরা কাকে স্তুতি করব?” (ঋঃ ৮৷১০০৷৩)
পরমৈশ্বর্যবান ভগবান (ইন্দ্র) তার সম্মুখে আবির্ভূত হয়ে বলছেন— “হে স্তোতা, এ আমি তোমার নিকট এসেছি, আমাকে দর্শণ কর ৷ সমস্ত ভুবনকে আমি মহিমা দ্বারা অভিভূত করি ৷ যজ্ঞের প্রদেষ্টৃগণ আমাকে বর্ধিত করে, আমি বিদারণশীল ভূমি বিদীর্ণ করি ৷” (ঋঃ ৮৷১০০৷৪)


 শ্রীপাদ দামোদর সাতবলেকর কৃত হিন্দী ‘সুবোধ ভাষ্য’তেও একই অর্থ প্রকাশিত হয়েছে ৷ দেখুন,



মহর্ষি শৌণক (৮৷১০০) এই সূক্ত প্রসঙ্গে বলেছেন যে- ‘ভৃগুপুত্র নেম বলেছিলেন ইন্দ্র বলতে কেউ নাই ৷ একথা শুনে ইন্দ্র তার সম্মুখে আবির্ভূত হয়ে তাকে দর্শন দেন এবং ৪ ও ৫ নং মন্ত্র স্বয়ং ইন্দ্রের বাক্য ৷ নেম ঋষি ইদ্রদেবকে দর্শন করে যার পর নাই আনন্দিত হন ৷’ (বৃহদ্দেবতা ৬/১১৭-১১৯)


ভগবদ্দর্শনের আরো একটি স্পষ্ট স্বীকারোক্তি পাই ৷—

ঋগ্বেদ সংহিতা
মন্ডল-১ ৷ সূক্ত-২৫ ৷ মন্ত্র-১৮
দেবতা- বরুণ ৷ ঋষি- শুণঃশেপ


দর্শং নু বিশ্বদর্শতং দর্শং রথমধি ক্ষমি ৷
এতা জুষত মে গিরঃ ৷৷


সায়ণভাষ্যঃ (বিশ্বদর্শতং) সর্ব্বজন-দর্শনীয়, এবং আমাদিগের প্রতি কেবল অনুগ্রহের নিমিত্ত আবির্ভূত বরুণদেবকে (দর্শং নু) আমি নিশ্চিতভাবে দেখিয়াছি ; এবং (দর্শং রথমধি ক্ষমি) এই ভূমি তথা পৃথিবীতে বরুণদেবের রথকে প্রকাশ্যভাবে দেখিয়াছি, (এতা মে গিরঃ) আর আমি যেসমস্ত স্তুতি উচ্চারণ করিতেছি, সেই বরুণদেব আমার সেই সমস্ত স্তুতি (জুষত) সেবা অর্থাৎ গ্রহণ করিয়াছেন ৷

শ্রীদূর্গাদাস লাহিড়ী শর্ম্মন এইরুপ অনুবাদ করেছেন :—
“সেই সর্ব্বদর্শী ভগবানকে আমি নিশ্চয় দেখিয়াছি ; পৃথিবীতে তাঁহার গতিবিধি সম্যকরূপে আমার দৃষ্টিগোচর হইয়াছে ৷ আমার উচ্চারিত স্তোত্রসমুদায় তাঁহার নিকট পৌছয়াছে (তিনি আমার স্তোত্রসমুদায় প্রাপ্ত হইয়াছেন)৷”


স্বামী সত্য প্রকাশ সরস্বতী কৃত অনুবাদ :—
“ I have seen Him whom all may see. I am feeling the presence of His divine chariot above the earth—His activity around us—I am sure that He has accepted my devotional songs. ”
শ্রীঅরবিন্দ কপালী শাস্ত্রী ইনস্টিটিউট হতে প্রকাশিত ঋগ্বেদ হতে অনুবাদ ও মন্তব্যও দেখুন—


এছাড়া, মহর্ষি পাতঞ্জল বলেছেন— “স্বাধ্যায়াদিষ্টদেবতাসম্প্রয়োগঃ” ৷৷
অর্থ—‘সাধ্যায় দ্বারা ইষ্টদেবতার দর্শন (সাক্ষাৎকার) হয় ৷’ [যোগদর্শন ২/৪৪]


এবং দেবর্ষি নারদ (ভক্তিসূত্র- ৮০) বলেছেন—
‘স কীর্ত্যমানঃ শীঘ্রমেবাবির্ভবতি অনুভাবয়তি চ ভক্তান্‘৷৷
অর্থ—“ভজনায় তুষ্ট ভগবান শীঘ্রই (ভক্তের নিকট) আবির্ভূত হন এবং ভক্তদের তাঁর অনুভব করতে দেন ৷”


≈ Om Hari Om ≈



বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

আর্যসমাজের বেদভাষ্য হতে ঈশ্বরের সাকারত্ব প্রতিপাদন









YAJUR VEDA
English Translation by
Swami Satya Prakash Saraswati
and Udaya Vir Viraj

DAV Publication Division
       (Veda Pratisthan)
Arya Samaj Building, UP Block,
Pitampura, Delhi- 110034
(এই বেদভাষ্য হতে ঈশ্বরের সাকারত্ব প্রমাণ করা যাইতেছে, পাঠকের সুবিধার্থে বাংলায় অনুবাদ করিয়া দেওয়া হইল—)


♦ যা তে রুদ্র শিবা তনূরঘোরাহ’পাপকাশিনী ৷
তয়া নস্তনুবা শন্তময়া গিরিশন্তাভিচাকশীহি ৷৷
— “হে ভীষণমূর্তি ভগবান, তোমার যে  মঙ্গলময়, অভীতিপ্রদ শরীর যা দেখতে আনন্দদায়ক, হে গিরিশন্ত, সেই সর্বমনোরম রুপে কৃপালু হয়ে আমাদের দিকে তাকাও ৷” (যজুর্বেদ ১৬/২)

টীকাঃ ‘তনূ’= শরীর, রুপ ৷ ‘শিবা’= মঙ্গলময় ৷
ঈশ্বরের দুটি রুপ আছে, একটি অত্যন্ত ভীতিজনক, অন্যটি প্রসন্ন ও মঙ্গলজনক ৷
‘অঘোরা’= যা ভীতিপ্রদ নয়, প্রসন্ন, সৌম্য ৷
‘অপাপকাশিনী’= যা দেখতে আনন্দদায়ক ৷ যা দেখতে ভালো লাগে না—‘পাপকাশিনী’ এর বিপরীত ৷
‘গিরিশন্ত’= যিনি গিরি তথা পর্বতে শয়ন, ভ্রমন করেন ও উহাকে জানেন ৷
‘শন্তময়া’= সর্বাপেক্ষা মনোরম ৷
‘অভিচাকশীহি’= দেখা, তাকানো, আমাদের দিকে তাকাও ৷ অপিচ, আমাদের সম্মুখে আবির্ভূত হও যাতে আমরা তোমাকে দেখতে পারি ৷



♦শ্রুধি শ্রুৎকর্ণ বহ্নিভির্দেবৈরগ্নে সয়াবভিঃ ৷
আ সীদন্তু বর্হির্ষি মিত্রো অর্যমা প্রাতর্যাবাণো অধ্বরম্ ৷৷
—“হে পূজনীয় ঈশ্বর, অনুগ্রহপূর্বক তুমি তোমার দিব্য কর্ণ দ্বারা আমার প্রার্থনাসমূহ শ্রবণ করো..”৷ (যজুর্বেদ ৩৩/১৫)

টীকাঃ ‘শ্রুৎকর্ণ’= যাঁর কর্ণ ভক্তের প্রার্থনা শুনতে পায় ৷


♦ দৃতে দৃংহ মা ৷ জ্যোক্তে সন্দৃসি জীব্যাসং
জ্যোক্তে সন্দৃসি জীব্যাসম্ ৷৷ (যজুর্বেদ ৩৬/১৯)
— “হে শক্তিমান ভগবান, তুমি দুঃখ-বিপর্যয়ে আমাকে অবিচলিত করো ৷ আমি যেন দীর্ঘজীবী হই, তোমাকে দর্শন করে ৷ তোমার সন্দর্শনে আমি দীর্ঘকাল বেঁচে থাকব ৷”


সমগ্র বেদ সংহিতাতে ঈশ্বররের আকারত্বের এইরুপ বহু প্রমাণ আছে, কিন্তু নিরাকারবাদীদের প্রমাণ মাত্র একটি, তা হচ্ছে যজুর্বেদের ৪০তম অধ্যায়ের ৮নং মন্ত্রটি ৷ এছাড়া বেদের সংহিতাভাগে এমন কোন মন্ত্র নাই যে তা দ্বারা ঈশ্বর নিরাকার এইরুপ দাবি করা যায় ৷

বৈষ্ণবাচার্যগণ সিদ্ধান্ত করেন যে, ভগবানের প্রাকৃত শরীর (physical form) নাই [যজুর্বেদ ৪০/৮], কিন্তু অপ্রাকৃত দিব্য শরীর (divine form) আছে ৷ পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, স্বামী সত্য প্রকাশ সরস্বতী কৃত যজুর্বেদ ভাষ্যে স্পষ্টত সেই সিদ্ধান্তই সমর্থিত হয়েছে ৷
………………………………………………………………………………
এইরুপে আর্যসমাজীগণ কৃত বেদভাষ্যেও ঈশ্বরের আকারত্ব প্রমাণিত হইল ৷ এক্ষণে আর্যসমাজী বালকগুলো কি করিবে? আর্যসমাজের মুখে ঝাটা মেরে আর্যসমাজ হতে প্রকাশিত বেদভাষ্যকে ভুল বলিবে???

আরো পড়ুন- ঈশ্বর কি নিরাকার?


মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৮

পরমেশ্বর শ্রীভগবান কি নিরাকার?


স পর্যগাচ্ছুক্রমকায়মব্রণম,
অস্নাবিরং শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্ ৷
কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্যাথাতথ্যতোহ’র্থান্, ব্যদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।।
[শুক্লযজুর্বেদ ৪০/৮ (বা, ঈশোপনিষদ-৮)]
(যজুর্বেদ সংহিতা, শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামী) 

শ্রীপাদ শঙ্করাচার্য এই মন্ত্রের ভাষ্যে লিখেছেন— ব্রহ্ম ‘অকায়ম্’-শব্দে লিঙ্গশরীরবর্জিত, ‘অব্রণম্’ ও ‘অস্নাবিরম্’ শব্দদ্বয়ে স্থূল-শরীর প্রতিষেধ, ‘শুদ্ধম্’-শব্দে কারণশরীর প্রতিষেধ হইয়াছে ...৷
লিঙ্গদেহ, স্থূলদেহ ও কারণদেহ হইতেছে সংসারী জীবের দেহ, প্রাকৃত; ব্রহ্মের কোনরুপ প্রাকৃত দেহই নাই, তাহাই এ-স্থলে বলা হইল ৷ ইহাদ্বারা ব্রহ্মের অপ্রাকৃত চিন্ময় স্বরুপভূত বিগ্রহ নিষিদ্ধ হয় নাই ৷ এই মন্ত্রের ব্যাখ্যায় ত্রিদণ্ডী স্বামী শ্রীভক্তিহৃদয় বন লিখেছেন—
“তাঁহার ভোগযোগ্য কোন প্রাকৃত স্থূলসূক্ষ্ম শরীর নাই, কিন্তু ব্রহ্ম-পরমাত্মারূপ বৃহৎ ও সূক্ষ্ম অধিষ্ঠান ব্যতীত ভগবৎস্বরুপে অপ্রাকৃত-অপূর্ব্ব-রূপ-লাবণ্য-মাধুর্য্য-বিশিষ্ট নিত্য মধ্যমাকৃতিযুক্ত ৷” (বেদের পরিচয়, পৃঃ ৩৩৬)

ভগবানের দিব্য অপ্রাকৃত সাকার রূপের বর্ণনা উক্ত যজুর্বেদেই আছে ৷ যথাঃ—

নমস্তে রুদ্র মন্যব উতো ত ইষবে নমঃ৷
বাহুভ্যামুত তে নমঃ ৷৷১৬/১৷৷
— “হে দুঃখনাশক জ্ঞানপ্রদ রুদ্র, তোমার ক্রোধের উদ্দেশ্যে নমস্কার, তোমার বাণ ও বাহুযুগলকে নমস্কার করি ৷”
.
যা তে রুদ্র শিবা তনূরঘোরাহ’পাপকাশিনী ৷
তয়া নস্তনুবা শন্তময়া গিরিশন্তাভিচাকশীহি ৷৷১৬/২৷৷
— “হে রুদ্র, তোমার যে  মঙ্গলময়, সৌম্য, পুণ্যপ্রদ শরীর আছে, হে গিরিশ, সে সুখতম শরীরের দ্বারা আমাদের দিকে তাকাও ৷”
.
যামিষুং গিরিশন্ত হস্তে বিভর্ষ্যস্তমে ৷
শিবাং গিরিত্র তাং কুরু মা হিংসীঃ পুরুষং জগৎ৷৷১৬/৩৷৷
— “হে গিরিশ, শত্রুর প্রতি নিক্ষেপের জন্য হস্তে যে বাণ ধারণ করেছ, হে প্রাণিগণের ত্রাতা, তা কল্যাণকর কর, পুরুষ ও জগতের হিংসা করো না ৷”

(যজুর্বেদ সংহিতা, শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামী) 
আর্যসমাজী তুলসীরাম শর্মা কৃত অনুবাদও দেখুন-


[ দয়ানন্দ নিরাকরণঃ যজুর্বেদের ষোড়শ অধ্যায়ে স্পষ্টত রূদ্ররুপী ভগবানের সাকার রূপের বর্ণনা পাওয়া গেল ৷ কিন্তু নিরাকারবাদের মোহে আচ্ছন্ন দয়ানন্দ সরস্বতী তার ভ্রান্ত মতবাদ রক্ষা করতে গিয়ে উপর্যুক্ত মন্ত্রগুলোর বিকৃত অর্থ করেছে অর্থাৎ স্বেচ্ছাচারিতা করে ভগবানের সাকাররূপ অস্বীকার করেছে ৷ তিনি ওখানে ‘রুদ্র’ নামটিকে ভগবান-পক্ষে ব্যাখ্যা না করে, তাকে কোন মনুষ্য রাজা বানিয়ে দিয়েছে ৷ কিন্তু এটা ভগবানের সাকাররূপ স্বীকার না করার জন্য দয়ানন্দের ভন্ডামি মাত্র ৷ এস্থলে বর্ণিত রুদ্র যে ঈশ্বর, তা উপনিষদ দ্বারা সমর্থিত হচ্ছে, কারণ যজুর্বেদ ১৬/২-৩ মন্ত্রদুটি শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে (৩/৫-৬) হুবহু গৃহীত হয়েছে ৷ উপনিষদ ব্রহ্মবিদ্যা আলোচনার স্থান, বেদবর্ণিত উক্ত রুদ্র ব্রহ্ম না হলে ব্রহ্মজ্ঞ ঔপনিষদিক ঋষিগণ উপনিষদে তাঁকে ব্রহ্ম হিসেবে বর্ণনা করত না ৷ ব্রহ্মজ্ঞ ঋষিগণ বেদ বেশি বুঝতেন, নাকি কলিকালের নব্য পন্ডিত দয়ানন্দ বেশি বুঝে? দেখুন, রুদ্রের পরিচয়—

একোহি রূদ্রো ন দ্বিতীয়ায় তস্হু-
         র্য ইমাঁল্লোকান্ ঈশত ঈশনীভিঃ ৷
প্রত্যঙ্ জনাংস্তিষ্ঠতি সঞ্চুকোপান্তকালে
            সংসৃজ্য বিশ্বা ভুবনানি গোপাঃ।।
—“রুদ্র অদ্বিতীয়, [ব্রহ্মবিদ্গণ] দ্বিতীয় কাহারও আকাঙ্ক্ষায় ছিলেন না। সেই রূদ্রই এই সমুদয় লোককে স্বীয় শক্তিসহায়ে নিয়মিত করেন। তিনি প্রত্যেক জীবের অন্তর্জামিরূপে অবস্থিত আছেন। তিনি নিখিল বিশ্ব সৃষ্টি করিয়া তাহার পালক হন এবং প্রলয়কালে উহার সংহার করেন।” (শ্বেতাশ্বতর ৩/২)
.
অজাত ইত্যেবং কশ্চিদ্ভীরুঃ প্রতিপদ্যতে।
রুদ্র যত্তে দক্ষিণং মুখং তেন মাং পাহি নিত্যং।
 — “তোমাকে অজাত জেনে কেহ তোমার কাছে আসে আর তার চিত্ত ভয়ব্যাকুল হয় ৷ হে রুদ্র, হে ভীষণ, তোমার সেই যে অন্য হাস্যময় প্রসন্ন মুখমন্ডল, তার মধুর হাসি দিয়ে তুমি আমায় রক্ষা কর সর্বদা ৷” (শ্বেতাশ্বতর ৪/২১)]



আবার, আর্যসমাজ হতে প্রকাশিত, স্বামী সত্যপ্রকাশ সরস্বতী অনুদিত বেদভাষ্যেও ভগবানের দিব্য অঙ্গ স্বীকৃত হয়েছে ৷ উদাহরণস্বরুপ (যজুর্বেদ ৩৩/১৫)—
“O adorable God, may you with your divine ears, please listen to my prayers...”
অর্থাৎ— “হে পূজনীয় ঈশ্বর, অনুগ্রহপূর্বক তুমি তোমার দিব্য কর্ণ দ্বারা আমার প্রার্থনাসমূহ শ্রবণ করো ৷”
আমার প্রার্থনা এই যে, “অদব্ধেন ত্বা চক্ষুষাবপশ্যামি” ৷
“হে ভগবন্! আমার বিভ্রমরহিত নেত্রের দ্বারা আমি যেন আপনাকে দর্শন করিতে সমর্থ হই ৷”
(শুক্লযজুর্বেদ ১/৩০, অনুবাদক- দূর্গাদাস লাহিড়ী)


 সুতরাং দেখা যাচ্ছে, শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামী, দূর্গাদাস লাহিড়ী, তুলসীরাম শর্ম্মা ও সত্যপ্রকাশ সরস্বতী— প্রত্যেকের যজুর্বেদভাষ্যেই ঈশ্বরের আকারত্ব স্বীকৃত ৷


মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের অমোঘ সত্যবাণী—
“ষড়ৈশ্বর্য-পূণানন্দ-বিগ্রহ যাঁহার ৷
হেন ভগবানে তুমি কহ ‘নিরাকার’ ৷৷
তাঁহার বিভূতি দেহ সব চিদাকার ৷
চিদ্বিভূতি আচ্ছাদিয়া কহে নিরাকার ৷৷”
ইহা যারা জানেন না বা মানেন না তারা নিরাকার ভেবে ভুল করেন ৷ ঈশ্বরের সত্তা, স্বরুপ ও দেহ সবই চিন্ময়, দিব্য অপ্রাকৃত ৷

অন্ধশ্চ বধিরো মূকঃ পঙ্গুঃ পণ্ডো বিনাসিকঃ ৷
ইত্যাদ্যা ব্যঙ্গতা-হেতোর্যা নিন্দা লোকসম্মতাঃ ৷
তা সর্ব্বাশ্চ নিরাকারবাদে কিং ন স্যুরীশ্বরে ৷৷
—যুক্তিমল্লিকা ১/১৪ “ইহলোকে জীবের অঙ্গবিশেষের হীনতাবশতঃ অন্ধ, বধির, মূক, পঙ্গু, নপুংসক, বিনাসিক প্রভৃতি নিন্দা হইয়া থাকে, ব্রহ্মকে নিরাকার বলিলে তাঁহার সর্ব্বাঙ্গ-হীনতাবশতঃ, উক্ত নিন্দাসমষ্টি তাঁহাতেই প্রযুক্ত হইল ৷”

≈ ওম্ হরি ওম্ ≈


আরো পড়ুন - শিব-বিষ্ণুর একত্ব


সাম্প্রতিক পোস্ট

পুরুষ—কৃষ্ণ ৷৷ প্রকৃতি—রাধা

 পুরুষ—কৃষ্ণ ৷৷ প্রকৃতি—রাধা ======================= যোগেনাত্মা সৃষ্টিবিধৌ দ্বিধারূপো বভূব সঃ ৷ পুমাংশ্চ দক্ষিণার্ধাঙ্গো বামাঙ্গঃ প্রকৃতিঃস্...

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ