বিবিধ-প্রসঙ্গ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বিবিধ-প্রসঙ্গ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

মহাত্মা শুকদেব কতৃক ভাগবত পুরাণ বর্ণন বিষয়ক শঙ্কা নিবারণ


মহাভারত হতে দেখা যায়, পরীক্ষিতের জন্মের বহুকাল পূর্বেই ব্যাসপুত্র শুকদেব অন্তর্ধান করেন ৷ তাহলে পরীক্ষিতের মৃত্যুর সময়ে শুকদেব এসে তাঁকে ভাগবত শোনালেন কিভাবে?

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে, মহাভারতে পাই -
অন্তর্হিতঃ প্রভাবং তু দর্শয়িত্বা শুকস্তদা ৷
গুণান্ সন্ত্যজ্য শব্দাদীন্ পদমভ্যগমৎ পরম্ ৷৷
অর্থঃ— ‘শুকদেব নিজের যোগপ্রভাব দেখাইয়া অন্তর্হিত হইলেন এবং শব্দস্পর্শ প্রভৃতি বিষয় পরিত্যাগ করিয়া, পরমপদ লাভ করিলেন ৷’ (শান্তিপর্ব ৩১৯/৫৬, অনুবাদক—শ্রীহরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ ভট্টাচার্য্য)

পরমপদ লাভ করা অর্থ মুক্তিলাভ করা ৷ বেদান্তদর্শন (৪/৪/৮)-এ বলা হয়েছে, ‘সঙ্কল্পাদেব তচ্ছ্রুতেঃ’—মুক্তজীব যখন যা সংকল্প করেন সংকল্পমাত্রই তা সিদ্ধ হয় ৷ এ বিষয়ে শ্রুতিই প্রমাণ ৷ যেমন- ছান্দোগ্যপোনিষদে (৮/২ খন্ডে) বলা হয়েছে যে, তাঁদের এমনই মহিমা যে ইচ্ছামাত্রই পিতা-মাতা-ভাই-বোন-বন্ধুদের সাথে মিলিত হতে পারেন, যদি অন্ন-পানীয় ভোগের ইচ্ছা করেন তা তৎক্ষণাৎ তাঁদের সম্মুখে উপস্থিত হয়.. ইত্যাদি ৷ আরো বলা হয়েছে যে, ‘দ্বাদশাহবদুভয়বিধং বাদরায়ণোহ’তঃ’—মুক্তজীব সত্যসংকল্পবিশিষ্ট অর্থাৎ যখন যা সংকল্প করেন সংকল্পমাত্রই তা সিদ্ধ হওয়ায় তাঁদের অশরীর অবস্থায় থাকা বা শরীর ধারণ করা উভয়ই সম্ভব, ইহা মহর্ষি বাদরায়ণ ব্যাসদেবের সিদ্ধান্ত (বেদান্তদর্শন ৪/৪/১২) ৷ মুক্তজীব এইরুপ প্রভাবযুক্ত হলে, শুকদেবের পক্ষে পরীক্ষীতের সভায় এসে ভাগবত বর্ণনা করা কি অসম্ভব কিছু ?
কিন্তু আপত্তি হতে পারে যে, মুক্ত পুরুষ শুকদেব কোন দুঃখে মর্ত্যলোকে এসে ভাগবত বর্ণনা করতে যাবেন? সেই উত্তর শুকদেব নিজেই দিয়েছেন, শুকদেব রাজা পরিক্ষীতকে বলিতেছেন:—
“হে রাজন্! যে সকল মুনি বিধি নিষেধ হইতে নিবৃত্ত হইয়া নির্গুণ ব্রহ্মে অবস্থিত, তাঁহারাও হরির গুণানুকীর্ত্তনে আমোদ করিয়া থাকেন ৷ মহারাজ! আমি আপনার নিকট যে পুরাণ কহিতেছি, ইহা ভগবানের কথিত, ইহার নাম ভাগবত ৷ এ অতি প্রধান পুরাণ, সর্ব্ব বেদের তুল্য, অতএব ইহা অতি অপূর্ব্ব ৷ দ্বাপর যুগের শেষে কলিতে পিতা কৃষ্ণদ্বৈপায়নের নিকট আমি এই শাস্ত্র অধ্যয়ন করি ৷ হে রাজন্! আমি নির্গুণ ব্রহ্মে অবস্থিত ছিলাম সত্য, কিন্তু উত্তমঃশ্লোক ভগবানের লীলা আমার চিত্তকে আকর্ষণ করিয়াছিল, তাহাতেই আমার এই আখ্যান অধ্যয়ন করা হয় ৷ আপনি ভগবানের পরমভক্ত, তাই আপনার নিকট আমি এই শাস্ত্র ব্যাখ্যা করিতেছি ৷  ইহাতে যে ব্যক্তি শ্রদ্ধা করে, ভগবান্ মুকুন্দে তাহার নির্ম্মলা মতি হয় ৷” (শ্রীমদ্ভাগবত ২/১/৭-১০, অনুবাদক—শ্রীরামনারায়ণ বিদ্যারত্ন)
অতএব, শুকদেব স্বয়ং মু্ক্তপুরুষ হওয়া সত্ত্বেও মর্ত্যলোকে এসে ভাগবত বর্ণনা করার কারণ নিম্নরুপ—
প্রথমতঃ, মুক্তজীবেরাও শ্রীহরির লীলাকথা শ্রবণ-বর্ণনে পরমানন্দ লাভ করে থাকেন, তাই মুক্তপুরুষ শুকদেব স্বপ্রণোদিত হয়েই হরির লীলাকথায় পূর্ণ ‘ভাগবত’ আলোচনা করতে পরীক্ষিতের সভায় আসেন ৷
দ্বিতীয়ত,  ভাগবত পুরাণ সর্ববেদের তুল্য, এই গ্রন্থে যে শ্রদ্ধা করে তার শ্রীহরিতে চিত্ত নিবিষ্ট হয় ৷ তাই মানব যাতে শ্রীহরির প্রতি উন্মুখ হয় সেই হিতসাধনের জন্যই শুকদেব ভাগবত প্রচার করতে আসেন৷


রাজা পরীক্ষিত শুকদেবকে বলেছেন—
‘আপনার গতি অব্যক্ত, মানুষে কি আপনার দর্শন পাইতে পারে? বিশেষতঃ আমরা ম্রিয়মাণ, আমাদের পক্ষে দর্শন লাভ কোন মতেই সম্ভাবিত ছিলনা, বোধহয় শ্রীকৃষ্ণের কৃপাতেই সম্পন্ন হইল ৷’ (শ্রীমদ্ভাগবত ১/১৯/৩৩, অনুবাদক—শ্রীরামনারায়ণ বিদ্যারত্ন)

..........
প্রশ্নঃ কিন্তু যখন শুকদেব পরীক্ষিতের সভায় আসেন তখন শুকদেবের বয়স মাত্র ১৬ বছর থাকে কিভাবে? (ভাঃ ১/১৯/২৪)
উত্তরঃ আপনি কি মনে করেন যে মুক্তি লাভের পরও মুক্তজীবের বয়োঃবৃদ্ধি হতে থাকে?
.........


//ওঁ শ্রীকৃষ্ণার্পণমস্তু//

রবিবার, ১৩ মে, ২০১৮

দয়ানন্দ মুখচপেটিকা - শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ কি বোপদেব রচিত?


আর্যসমাজ প্রতিষ্ঠাতা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী তার ‘সত্যার্থ-প্রকাশ’ নামক সত্যনাশকারী গ্রন্থে শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ সম্পর্কে লিখেছে— “এই ভাগবত বোপদেব রচিত ৷ তাঁহার ভ্রাতা জয়দেব ‘গীতগোবিন্দ’ রচনা করিয়াছিলেন ৷ দেখ! তিনি স্বরচিত ‘হিমাদ্রি’ নামক গ্রন্থে এই মর্ম্মে শ্লোক লিপিবদ্ধ করেছেন— ‘আমি শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ রচনা করিয়াছি’ ৷ সেই লিপির তিন পত্র আমার নিকট ছিল ৷ তন্মেধ্যে এক পত্র হারাইয়া গিয়াছে ৷ সেই পত্রের লিখিত শ্লোকগুলির অভিপ্রায় লইয়া আমি নিম্নলিখিত শ্লোকদুটি রচনা করিয়াছি ৷ যিনি দেখিতে ইচ্ছা করেন, তিনি হিমাদ্রি গ্রন্থ দেখিয়া লইবেন ৷”
হিমাদ্রে সচিবস্যার্থে *******
***        *         *       *      *        **** ৷৷ ১
***        *         *       *     *       *****
********** শ্রীকৃষ্ণস্য যশোহম্বিতম্ ৷৷ ২
(সত্যার্থ-প্রকাশ, একাদশ সমুল্লাস)

এইরুপে দুটি নিজের লেখা শ্লোক দিয়ে দয়ানন্দ প্রমাণ করতে চেয়েছে ভাগবত বোপদেপ রচিত!! বলে কিনা, বোপদেব যে শ্লোকে লিখেছে যে, ভাগবত সে রচনা করেছে সেই শ্লোকের লিপিপত্রটি তার কাছ থেকে নষ্ট হয়েগেছে ৷ সেই পত্রটিই কেন নষ্ট হলো, বাকি দুই পত্র নষ্ট হলো না কেন? দয়ানন্দ কতটা মিথ্যাবাদী, শঠ, জোচ্চর ও বেয়াদব তা ধারণার অতীত ৷ মূলত দয়ানন্দের কাছে এমন কোন শ্লোকই ছিলনা যা দ্বারা সে প্রমাণ করতে পারে যে ভাগবত বোপদেবকৃত, তাই মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে লিপিপত্রটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে এই অজুহাত দেখিয়ে ও নিজের সন্তোষজনক দুটি বানোয়াট শ্লোক রচনা করে বলে কিনা ভাগবত বোপদেব রচিত?!!  আবার এও বলে যে “যিনি দেখিতে ইচ্ছা করেন, তিনি হিমাদ্রি গ্রন্থ দেখিয়া লইবেন” ; বস্তুত বোপদেব ‘হেমাদ্রি’ নামক কোন গ্রন্থ লিখেছে এমন কোন প্রমাণ নাই ৷ তবে তদানীন্তন রাজ্যের মন্ত্রী হেমাদ্রির অনুরোধে বোপদেব ‘মুক্তাফল’ ও ‘হরিলীলা’ নামক দুটি গ্রন্থ লেখেন ৷ এই গ্রন্থদ্বয় ভাগবতের টীকা বা ভাষ্য হিসেবে পরিগণিত হয় [নিচের স্ক্রীণশর্ট দেখুন] কিন্তু মূর্খ দয়ানন্দ ঐ টীকা-ভাষ্যমূলক গ্রন্থকেই মূল ভাগবত মনে করে ভ্রমে পতিত হয়েছিল অথবা বৈষ্ণবধর্মের প্রতি বিদ্বেষবশত ধূর্ত দয়ানন্দ জেনেশুনে ইচ্ছাপূর্বক মিথ্যা রটিয়েছে ৷
(বৃহন্মুগদ্ধবোধ ব্যাকরণম্ এর ‘বিজ্ঞপ্তি’)
(বিশ্বকোষ, চতুর্দশ খন্ড, পৃঃ ৪১৬)
আরো লক্ষ্য করুন, দয়ানন্দ এও বলেছে যে  বোপদেবের ভ্রাতা নাকি ‘গীতগোবিন্দ’ রচিয়তা জয়দেব ৷ একথাও সত্য নয়, কারণ (উপর্যুক্ত স্ক্রীণশর্ট আদ্যোপান্ত ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে) বোপদেবের পিতার নাম কেশব ৷ অন্যদিকে জয়দেবের পিতার নাম ভোজদেব ৷ প্রমাণ দেখুন, জয়দেব তার ‘গীতগোবিন্দ’ গ্রন্থের শেষে নিজ পরিচয় দিয়েছেন এভাবে --
শ্রীভোজদেবপ্রভবস্য বামাদেবীসুতশ্রীজয়দেবকস্য ৷
পরাশরাদিপ্রিয়বন্ধুকণ্ঠে শ্রীগীতগোবিন্দকবিত্বমস্তু ৷৷
অর্থ— শ্রীভোজদেব ও বামাদেবীর পুত্র কবি শ্রীজয়দেব ‘শ্রীগীতগোবিন্দ’ রচনা করিয়া পরাশরাদি প্রিয়বন্ধুকন্ঠে উপহারস্বরুপ অর্পণ করিলেন ৷

এইরুপে দয়ানন্দ সর্বথা মিথ্যাবাদীরুপে প্রমাণিত হলো ৷

বলা বাহুল্য যে, শুধু দয়ানন্দ নয়, আরো অনেক বৈষ্ণবধর্ম বিদ্বেষীই এইরুপ অপপ্রচার রটিয়েছিল ৷ তাদের অপপ্রচারের প্রতিবাদে রামাশ্রম কৃত ‘দুর্জনমুখচপেটিকা’ নামক একটি গ্রন্থ লিখিত হয় ৷ এই গ্রন্থে ভাগবতের প্রাচীনত্ব প্রতিপাদন করা হয় ৷ বিপক্ষীরা এই গ্রন্থের প্রতিবাদে অপর একটি গ্রন্থ লিখলে উহা খন্ডন করে ‘দুর্জনমুখপদ্মপাদুকা’ রচিত হয়েছিল ৷ সেই গ্রন্থে বিপক্ষবাদীদের প্রতি অত্যন্ত শ্লেষোক্তি করে ভাগবত যে ব্যাসদেব প্রণীত তাহাই প্রমাণ করা হয় ৷ এক্ষণে আমরা দয়ানন্দ মুখচপেটিকা করিলাম ৷


“ভাগবত বোপদেব-প্রণীত একথা বলা আর বন্ধার পুত্র বলা সমান ৷ আমরা গোঁড়ামীর পক্ষপাতী নহি, কতগুলি লেখক কেবল বৈষ্ণবধর্মের প্রতি বিদ্বেষভাব প্রকাশ করিবার জন্য অসার ও অযৌক্তিক তর্ক উত্থাপন করিয়া ভাগবত পুরাণ বোপদেবপ্রণীত বলিতে সাহসী হইয়াছেন ৷”— ডাক্তার শ্রীরামদাস সেন
পাঠকদের সুবিধার্থে ডাক্তার শ্রীরামদাস সেনের ‘বোপদেব ও শ্রীমদ্ভাগবত’ নামক একটি প্রবন্ধ পিডিএফ ফাইল আকারে দেওয়া হলো --

Pdf Download Link : Click here to Download



বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮

হরেকৃষ্ণ মহানাম মন্ত্র - কোন শাস্ত্রে আছে?


হরেকৃষ্ণ মাহানাম মন্ত্রটি প্রথমত পাওয়া যায় কৃষ্ণযজুর্বেদীয় কলি-সন্তরণ উপনিষদে ৷ সেখানে এইভাবে আছে—
“হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ৷
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে ৷৷”
এই উপনিষদে বলা হয়েছে যে, এই ষোল নাম (words) তথা বত্রিশ অক্ষর জপের মাধ্যমে কলির প্রভাব হতে মুক্ত হয়ে মোক্ষলাভ করা সম্ভব ৷

.
এরপর, রাধা-তন্ত্রে (২/৯) মহানাম মন্ত্রটি এইভাবে আছে—
“হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে ৷
                হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ৷৷”

.
বৃহন্নারদীয় পুরাণে (৩/৮/১২৬) বলা হয়েছে—
হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম্ ।
কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্যথা ।।
অর্থ— হরিনাম হরিনাম হরিনাম কেবল, কলিযুগে ইহা বিনা গতি নাই নাই নাই ৷
.
মহাভারতে (শান্তিপর্ব ২০৪/৭৭) ভীষ্মদেব রাজা যুধিষ্ঠিরকে উপদেশ দিয়েছেন—
“ভজস্বৈনং বিশালাক্ষং জপন্ কৃষ্ণেতি সত্তম ৷৷”
অর্থাৎ—তুমি কৃষ্ণনাম জপ করিতে থাকিয়া এই বিশালনয়ন কৃষ্ণের সেবা করো৷

(মহাভারত, হরিদাশ সিদ্ধান্তবাগীশ)

.
শ্রীভগবান গীতায় (৯/১৪) বলেছেন—
সততং কীর্তয়ন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢ়ব্রতাঃ।
নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে।।
“তাঁহারা (সাত্ত্বিকী প্রকৃতি-প্রাপ্ত মহাত্মগণ) যত্নশীল ও দৃঢ়ব্রত হইয়া ভক্তিপূর্বক সর্বদা আমার কীর্তন এবং বন্দনা করিয়া নিত্য সমাহিত চিত্তে আমার উপাসনা করেন ।”

৷৷ ওঁ শ্রীকৃষ্ণার্পণমস্তু ৷৷

বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৮

ব্রহ্ম প্রতিমা



প্রথমে পড়ুন : ন তস্য প্রতিমা অস্তি - প্রকৃত অর্থ বিশ্লেষণ

রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব
             তদস্য রূপং প্রতিচক্ষণায় ৷
ইন্দ্রো মায়াভিঃ পুরুরূপ ঈয়তে
           যুক্তা হস্য হরয়াঃ শতা দশ ৷৷ঋগ্বেদ ৬.৪৭.১৮৷৷
অনুবাদঃ “রুপে রুপে প্রতিরুপ (তাহার অনুরুপ) হইয়াছেন, সেই ইহার রুপকে প্রতিখ্যাপনের (জ্ঞাপনের) জন্য ৷ ইন্দ্র মায়াসমূহের দ্বারা বহুরুপ প্রাপ্ত হন ৷ যুক্ত আছে ইহার অশ্ব শত দশ (অর্থাৎ সহস্র) ৷”


অগ্নির্যথৈকো ভুবনং প্রবিষ্টো রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব৷
একস্তথা সর্বভূতান্তরাত্মা রূপং রূপং প্রতিরূপো বহিশ্চ৷৷
“অগ্নি যেমন এক হয়েও ভুবনের মধ্যে প্রবেশ করে রুপে রুপে বহুরুপ হয়ে আপনাকে ধরে দিয়েছে, তেমনি সর্বভূতের অন্তরস্থ অন্তরাত্মা এক হয়েও বাহির অবধি ভিন্ন ভিন্ন রুপ গ্রহণ করেছে ৷” (কঠঃ ২৷২৷৯)
.
বায়ুর্যথৈকো ভুবনং প্রবিষ্টো রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব৷
একস্তথা সর্বভূতান্তরাত্মা রূপং রূপং প্রতিরূপো বহিশ্চ৷৷
“বায়ু যেমন এক হয়েও ভুবনের মধ্যে প্রবেশ করে রুপে রুপে বহুরুপ হয়ে আপনাকে ধরে দিয়েছে, তেমনি সর্বভূতের অন্তরস্থ অন্তরাত্মা এক হয়েও বাহির অবধি ভিন্ন ভিন্ন রুপ গ্রহণ করেছে ৷” (কঠঃ ২৷২৷১০)
.
“রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব৷ অয়মত্মা ব্রহ্ম সর্ব্বানুভূঃ৷”
অর্থাৎ তিনি প্রতি বস্তুর রুপ ধারণ করিয়াছেন ৷ এই আত্মাই ব্রহ্ম ৷ তিনি সর্ব্বগত ৷ (বৃহদারণ্যক, ২৷৫৷১৯)
.
একো বশী সর্বভূতান্তরাত্মা একং রূপং বহুধা যঃ করোতি৷
“একক নিয়ন্তা হয়েও এই সর্বভূতের অন্তরাত্মা একই রুপকে বহুধা করে চলেছে ৷” (কঠঃ ২৷২৷১২)
.
“যো বিশ্বস্য প্রতিমানং বভুব” (ঋগ্বেদ ২৷১২৷৯)
অর্থাৎ—তিনি নিখিলের প্রতিমা হইয়াছিলেন ৷


সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ন তস্য প্রতিমা অস্তি অর্থাৎ ঈশ্বরের তুল্য কেহ না থাকলেও, ঈশ্বর কিন্তু সকলের তুল্য হইতে পারেন, যেকোন রুপ পরিগ্রহ করতে পারেন ৷ তাই ভক্ত-সাধক ঈশ্বরকে যে-প্রতিমাতেই পূজা করুক না কেন, তিনি সেই মূর্তিরূপেই ভক্তকে দেখা দিবেন ৷
“বায়ু যেমন পার্থিব পঙ্কজাদির গন্ধ, রেণুর বর্ণ ধারণ করিয়া নানাগন্ধ ও রুপবিশিষ্ট হয়, তেমনি সর্বদেহের অন্তর্যামী পরমাত্মা শ্রীভগবান উপাসকের বাসনা অনুযায়ী তাদের সম্মুখে আবির্ভূত হন, সেই পরমেশ্বরই আমার মনোরথ পূর্ণ করুন, অন্য দেবতা আশ্রয়ের প্রয়োজন কি?” (শ্রীমদ্ভাগবত ৬৷৪৷৩৪)
.
নমস্তে দেবদেবেশ! শঙ্খচক্রগদাধর ৷
ভক্তেচ্ছোপাত্তরুপায়­ পরমাত্মন্! নমোহস্তু তে ৷৷
নমঃ পঙ্কজনাভায় নমঃ পঙ্কজমালিনে ৷
নমঃ পঙ্কজনেত্রায় নমস্তে পঙ্কজাঙ্ঘ্রয়ে ৷৷
— “হে দেবদেব, হে সর্বেশ্বর, শঙ্খ-চক্র-গদাধারী আপনাকে নমস্কার ! হে পরমাত্মা, আপনি ভক্তগণের ইচ্ছানুরুপ রুপ ধারণ করিয়া থাকেন, আপনাকে নমস্কার ৷ পদ্মনাভ আপনাকে নমস্কার, পদ্মমালাধারী আপনাকে নমস্কার, কমল-নয়ন আপনাকে নমস্কার, কমল-চরণ আপনাকে নমস্কার ৷” (শ্রীমদ্ভাগবত ১০৷৫৯৷২৫-২৬)


মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৮

পরমেশ্বর শ্রীভগবান কি নিরাকার?


স পর্যগাচ্ছুক্রমকায়মব্রণম,
অস্নাবিরং শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্ ৷
কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্যাথাতথ্যতোহ’র্থান্, ব্যদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।।
[শুক্লযজুর্বেদ ৪০/৮ (বা, ঈশোপনিষদ-৮)]
(যজুর্বেদ সংহিতা, শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামী) 

শ্রীপাদ শঙ্করাচার্য এই মন্ত্রের ভাষ্যে লিখেছেন— ব্রহ্ম ‘অকায়ম্’-শব্দে লিঙ্গশরীরবর্জিত, ‘অব্রণম্’ ও ‘অস্নাবিরম্’ শব্দদ্বয়ে স্থূল-শরীর প্রতিষেধ, ‘শুদ্ধম্’-শব্দে কারণশরীর প্রতিষেধ হইয়াছে ...৷
লিঙ্গদেহ, স্থূলদেহ ও কারণদেহ হইতেছে সংসারী জীবের দেহ, প্রাকৃত; ব্রহ্মের কোনরুপ প্রাকৃত দেহই নাই, তাহাই এ-স্থলে বলা হইল ৷ ইহাদ্বারা ব্রহ্মের অপ্রাকৃত চিন্ময় স্বরুপভূত বিগ্রহ নিষিদ্ধ হয় নাই ৷ এই মন্ত্রের ব্যাখ্যায় ত্রিদণ্ডী স্বামী শ্রীভক্তিহৃদয় বন লিখেছেন—
“তাঁহার ভোগযোগ্য কোন প্রাকৃত স্থূলসূক্ষ্ম শরীর নাই, কিন্তু ব্রহ্ম-পরমাত্মারূপ বৃহৎ ও সূক্ষ্ম অধিষ্ঠান ব্যতীত ভগবৎস্বরুপে অপ্রাকৃত-অপূর্ব্ব-রূপ-লাবণ্য-মাধুর্য্য-বিশিষ্ট নিত্য মধ্যমাকৃতিযুক্ত ৷” (বেদের পরিচয়, পৃঃ ৩৩৬)

ভগবানের দিব্য অপ্রাকৃত সাকার রূপের বর্ণনা উক্ত যজুর্বেদেই আছে ৷ যথাঃ—

নমস্তে রুদ্র মন্যব উতো ত ইষবে নমঃ৷
বাহুভ্যামুত তে নমঃ ৷৷১৬/১৷৷
— “হে দুঃখনাশক জ্ঞানপ্রদ রুদ্র, তোমার ক্রোধের উদ্দেশ্যে নমস্কার, তোমার বাণ ও বাহুযুগলকে নমস্কার করি ৷”
.
যা তে রুদ্র শিবা তনূরঘোরাহ’পাপকাশিনী ৷
তয়া নস্তনুবা শন্তময়া গিরিশন্তাভিচাকশীহি ৷৷১৬/২৷৷
— “হে রুদ্র, তোমার যে  মঙ্গলময়, সৌম্য, পুণ্যপ্রদ শরীর আছে, হে গিরিশ, সে সুখতম শরীরের দ্বারা আমাদের দিকে তাকাও ৷”
.
যামিষুং গিরিশন্ত হস্তে বিভর্ষ্যস্তমে ৷
শিবাং গিরিত্র তাং কুরু মা হিংসীঃ পুরুষং জগৎ৷৷১৬/৩৷৷
— “হে গিরিশ, শত্রুর প্রতি নিক্ষেপের জন্য হস্তে যে বাণ ধারণ করেছ, হে প্রাণিগণের ত্রাতা, তা কল্যাণকর কর, পুরুষ ও জগতের হিংসা করো না ৷”

(যজুর্বেদ সংহিতা, শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামী) 
আর্যসমাজী তুলসীরাম শর্মা কৃত অনুবাদও দেখুন-


[ দয়ানন্দ নিরাকরণঃ যজুর্বেদের ষোড়শ অধ্যায়ে স্পষ্টত রূদ্ররুপী ভগবানের সাকার রূপের বর্ণনা পাওয়া গেল ৷ কিন্তু নিরাকারবাদের মোহে আচ্ছন্ন দয়ানন্দ সরস্বতী তার ভ্রান্ত মতবাদ রক্ষা করতে গিয়ে উপর্যুক্ত মন্ত্রগুলোর বিকৃত অর্থ করেছে অর্থাৎ স্বেচ্ছাচারিতা করে ভগবানের সাকাররূপ অস্বীকার করেছে ৷ তিনি ওখানে ‘রুদ্র’ নামটিকে ভগবান-পক্ষে ব্যাখ্যা না করে, তাকে কোন মনুষ্য রাজা বানিয়ে দিয়েছে ৷ কিন্তু এটা ভগবানের সাকাররূপ স্বীকার না করার জন্য দয়ানন্দের ভন্ডামি মাত্র ৷ এস্থলে বর্ণিত রুদ্র যে ঈশ্বর, তা উপনিষদ দ্বারা সমর্থিত হচ্ছে, কারণ যজুর্বেদ ১৬/২-৩ মন্ত্রদুটি শ্বেতাশ্বতর উপনিষদে (৩/৫-৬) হুবহু গৃহীত হয়েছে ৷ উপনিষদ ব্রহ্মবিদ্যা আলোচনার স্থান, বেদবর্ণিত উক্ত রুদ্র ব্রহ্ম না হলে ব্রহ্মজ্ঞ ঔপনিষদিক ঋষিগণ উপনিষদে তাঁকে ব্রহ্ম হিসেবে বর্ণনা করত না ৷ ব্রহ্মজ্ঞ ঋষিগণ বেদ বেশি বুঝতেন, নাকি কলিকালের নব্য পন্ডিত দয়ানন্দ বেশি বুঝে? দেখুন, রুদ্রের পরিচয়—

একোহি রূদ্রো ন দ্বিতীয়ায় তস্হু-
         র্য ইমাঁল্লোকান্ ঈশত ঈশনীভিঃ ৷
প্রত্যঙ্ জনাংস্তিষ্ঠতি সঞ্চুকোপান্তকালে
            সংসৃজ্য বিশ্বা ভুবনানি গোপাঃ।।
—“রুদ্র অদ্বিতীয়, [ব্রহ্মবিদ্গণ] দ্বিতীয় কাহারও আকাঙ্ক্ষায় ছিলেন না। সেই রূদ্রই এই সমুদয় লোককে স্বীয় শক্তিসহায়ে নিয়মিত করেন। তিনি প্রত্যেক জীবের অন্তর্জামিরূপে অবস্থিত আছেন। তিনি নিখিল বিশ্ব সৃষ্টি করিয়া তাহার পালক হন এবং প্রলয়কালে উহার সংহার করেন।” (শ্বেতাশ্বতর ৩/২)
.
অজাত ইত্যেবং কশ্চিদ্ভীরুঃ প্রতিপদ্যতে।
রুদ্র যত্তে দক্ষিণং মুখং তেন মাং পাহি নিত্যং।
 — “তোমাকে অজাত জেনে কেহ তোমার কাছে আসে আর তার চিত্ত ভয়ব্যাকুল হয় ৷ হে রুদ্র, হে ভীষণ, তোমার সেই যে অন্য হাস্যময় প্রসন্ন মুখমন্ডল, তার মধুর হাসি দিয়ে তুমি আমায় রক্ষা কর সর্বদা ৷” (শ্বেতাশ্বতর ৪/২১)]



আবার, আর্যসমাজ হতে প্রকাশিত, স্বামী সত্যপ্রকাশ সরস্বতী অনুদিত বেদভাষ্যেও ভগবানের দিব্য অঙ্গ স্বীকৃত হয়েছে ৷ উদাহরণস্বরুপ (যজুর্বেদ ৩৩/১৫)—
“O adorable God, may you with your divine ears, please listen to my prayers...”
অর্থাৎ— “হে পূজনীয় ঈশ্বর, অনুগ্রহপূর্বক তুমি তোমার দিব্য কর্ণ দ্বারা আমার প্রার্থনাসমূহ শ্রবণ করো ৷”
আমার প্রার্থনা এই যে, “অদব্ধেন ত্বা চক্ষুষাবপশ্যামি” ৷
“হে ভগবন্! আমার বিভ্রমরহিত নেত্রের দ্বারা আমি যেন আপনাকে দর্শন করিতে সমর্থ হই ৷”
(শুক্লযজুর্বেদ ১/৩০, অনুবাদক- দূর্গাদাস লাহিড়ী)


 সুতরাং দেখা যাচ্ছে, শ্রীবিজনবিহারী গোস্বামী, দূর্গাদাস লাহিড়ী, তুলসীরাম শর্ম্মা ও সত্যপ্রকাশ সরস্বতী— প্রত্যেকের যজুর্বেদভাষ্যেই ঈশ্বরের আকারত্ব স্বীকৃত ৷


মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের অমোঘ সত্যবাণী—
“ষড়ৈশ্বর্য-পূণানন্দ-বিগ্রহ যাঁহার ৷
হেন ভগবানে তুমি কহ ‘নিরাকার’ ৷৷
তাঁহার বিভূতি দেহ সব চিদাকার ৷
চিদ্বিভূতি আচ্ছাদিয়া কহে নিরাকার ৷৷”
ইহা যারা জানেন না বা মানেন না তারা নিরাকার ভেবে ভুল করেন ৷ ঈশ্বরের সত্তা, স্বরুপ ও দেহ সবই চিন্ময়, দিব্য অপ্রাকৃত ৷

অন্ধশ্চ বধিরো মূকঃ পঙ্গুঃ পণ্ডো বিনাসিকঃ ৷
ইত্যাদ্যা ব্যঙ্গতা-হেতোর্যা নিন্দা লোকসম্মতাঃ ৷
তা সর্ব্বাশ্চ নিরাকারবাদে কিং ন স্যুরীশ্বরে ৷৷
—যুক্তিমল্লিকা ১/১৪ “ইহলোকে জীবের অঙ্গবিশেষের হীনতাবশতঃ অন্ধ, বধির, মূক, পঙ্গু, নপুংসক, বিনাসিক প্রভৃতি নিন্দা হইয়া থাকে, ব্রহ্মকে নিরাকার বলিলে তাঁহার সর্ব্বাঙ্গ-হীনতাবশতঃ, উক্ত নিন্দাসমষ্টি তাঁহাতেই প্রযুক্ত হইল ৷”

≈ ওম্ হরি ওম্ ≈


আরো পড়ুন - শিব-বিষ্ণুর একত্ব


রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭

কে বড়? শিব না বিষ্ণু?




সাধ্যানামপি দেবানাং দেবেদেবেশ্বরঃ প্রভুঃ।
লোকভাবনভাবজ্ঞ ইতি ত্বাং নারদোহব্রবীৎ।।
—“নারায়ণ! আপনি দেবগণ এবং সাধ্যগণেরও প্রভু দেবদেব ব্রহ্মা এবং শিবেরও অধীশ্বর, আর আপনি লোকের মনের ভাব জানেন, ইহা নারদ বলিয়াছেন।”
(মহাভারত, ভীষ্মপর্ব ৬৭/২, অনুবাদক—হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ)
                                  ↑↑↓↓
স এস রুদ্রভক্তশ্চ কেশবো রুদ্রসম্ভবঃ।
সর্ব্বরুপং ভবং জ্ঞাত্বা লিঙ্গে যো আর্চ্চয়ত প্রভুম্।।
—“যিনি জগদীশ্বর শিব কে সর্ব্বময় জানিয়া তাঁহার লিঙ্গে পূজা করিতেন, তিনি শিবাংশ জাত ও শিব ভক্ত সেই নারয়ণ এই হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ ৷”
(মহাভারত, দ্রোণ পর্ব্ব ১৬৯/৬২, অনুবাদক— ঐ)

এই শ্লোকদুটি নিয়ে কতিপয় শৈব ও বৈষ্ণবগণকে পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা যায় ৷ আপতদৃষ্টিতে শ্লোকদুটি পরস্পর বিরোধী মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এতে কোন বিরোধ নাই ৷ সমাধান দেখুন-
মহাভারতের পরিশিষ্ট হরিবংশ (অধ্যায়-১৮৩) হতে বর্ণিত—‘রুদ্রদেবের উপাস্য যেমন বিষ্ণু, বিষ্ণুর উপাস্যও তদ্রুপ রুদ্রদেব ৷ ইঁহারা উভয়েই একাত্মা, দৃশ্যতঃ দ্বিধাভূত হইয়া নিত্য জগতে বিচরণ করিতেছেন ৷ শঙ্কর হইতে বিষ্ণু ভিন্ন নহে, বিষ্ণু হইতেও রুদ্র ভিন্ন নহে ৷’

অর্থাৎ শিব ও বিষ্ণু স্বরুপতঃ এক, তথাপিও লোকশিক্ষার নিমিত্তি দ্বিধাভূত হয়ে একে অপরের উপাসক হন ৷

অহং ব্রহ্মা চ শর্ব্বশ্চ জগতঃ কারণং পরম্ ৷
আত্মেশ্বর উপদ্রষ্টা স্বয়ংদৃগবিশেষণঃ ৷৷
শ্রীভগবান বিষ্ণু বলিলেন—‘আমিই জগতের কারণ, আত্মা, ঈশ্বর, সাক্ষী, স্বপ্রকাশ এবং উপাধিশূণ্য, এবং আমিই ব্রহ্মা ও শিবরুপ ধারণ করিয়া থাকি ৷’
(শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ ৪৷৭৷৫০)

ব্রহ্মা বিষ্ণুর্মহেশোহমুমা স্কন্দো বিনায়কঃ |
ইন্দ্রোঽগ্নিশ্চ যমশ্চাহং নিঋতির্বরুণোঽনিলঃ ||
ভগবান শিব বলিলেন— ‘আমি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ, উমা, স্কন্দো, বিনায়ক ৷ আমি ইন্দ্র, অগ্নি এবং যম ৷ আমি নিঋতি, বরুণ ও বায়ু ৷’ (শিবগীতা ৬৷২২)


 অতএব আসুন, সকলে এই প্রার্থনা করি—
যথা শিবময়ো বিষ্ণুবেরং বিষ্ণুময়ঃ শিবঃ ৷
যথান্তরং ন পশ্যামি তথা মে স্বস্তিরাুযুষি ৷৷
অর্থাৎ—‘বিষ্ণু যে প্রকার শিবময়, শিবও সে প্রকার বিষ্ণুময় ৷ আমার জীবন এমন মঙ্গলময় হোক যেন ইঁহাদের মধ্যে পার্থক্য না দেখি ৷’ (স্কন্দোপনিষৎ, ৯)
‘(I bow) to Shiva of the form of Vishnu and  Vishnu who is Shiva; Vishnu is Shiva’s  heart and Shiva, Vishnu’s. Just as Vishnu is  full of Shiva, so is Shiva full of Vishnu. As I see no difference, I am well all my life.’ (Skanda Upanishad, 8 - 9)



সাম্প্রতিক পোস্ট

পুরুষ—কৃষ্ণ ৷৷ প্রকৃতি—রাধা

 পুরুষ—কৃষ্ণ ৷৷ প্রকৃতি—রাধা ======================= যোগেনাত্মা সৃষ্টিবিধৌ দ্বিধারূপো বভূব সঃ ৷ পুমাংশ্চ দক্ষিণার্ধাঙ্গো বামাঙ্গঃ প্রকৃতিঃস্...

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ