শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭

শূদ্রবিরোধী দয়ানন্দ

দয়ানন্দ মতবাদ খন্ডন : পর্ব-৪


প্রশ্নঃ— বেদপাঠে কি শূদ্রের অধিকার আছে?
উত্তরঃ— আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী যজুর্বেদ ২৬/২ দ্বারা সিদ্ধান্ত করেন যে, শূদ্রদেরও বেদপাঠে অধিকার আছে ৷
(সত্যার্থ-প্রকাশ, ৩য় সমুল্লাস)



প্রশ্নঃ— তবে শঙ্করাচার্যসহ সকল প্রচলিত ভাষ্যকারগণ তাদের ব্রহ্মসূত্র ভাষ্যে শূদ্রের প্রতি বেদপাঠ অধিকার নিষেধ করেছেন কেন?
উত্তরঃ— “যে স্থলে নিষেধ আছে সে স্থলে নিষেধের অভিপ্রায় এই যে, যাহাকে পড়াইলেও কিছুই শিখিতে পারে না, সে নির্ব্বোধ ও মূর্খ হওয়ায় তাকে ‘শূদ্র’ বলা হয় ৷ তাহার পড়া ও তাহাকে পড়ান নিষ্ফল ৷”— স্বামী দয়ানন্দ
(সত্যার্থ-প্রকাশ, ৩য় সমুল্লাস)


এখানে একটি বিষয় সমীক্ষার প্রয়োজন আছে ৷ দয়ানন্দ যজুর্বেদ (২৬৷২) দ্বারা শূদ্রেরও বেদ অধিকার প্রতিপাদন করেছেন ৷ কিন্তু এই তৃতীয় সমুল্লাসের প্রথম দিকেই সুশ্রুত সংহিতা হতে প্রমাণ উদ্ধৃত করে সিদ্ধান্ত করেছেন যে, শূদ্র কুলীন ও শুভ লক্ষণযুক্ত হলে “মন্ত্রসংহিতা” ব্যতীত সকল শাস্ত্র পড়তে পারবে ৷
(সত্যার্থ-প্রকাশ, ৩য় সমুল্লাস)


মন্ত্রসংহিতা কোনগুলো? দয়ানন্দ সপ্তম সমুল্লাসে বলেছেন- ঋক, সাম, যজুঃ ও অথর্ব— এইগুলো মন্ত্রসংহিতা, এগুলোই বেদ ৷ ইহা ব্যতীত অন্যকোন শাস্ত্র বেদ নয়! তাহলে ভাবুনতো, দয়ানন্দ কি আদৌ শূদ্রকে বেদে অধিকার দিয়েছে?
(সত্যার্থ-প্রকাশ, ৭ম সমুল্লাস)


দয়ানন্দের প্যাচঃ যজুর্বেদ ২৬/২ দ্বারা শূদ্রকে বেদাধিকার দিলেন→ সুশ্রুত সংহিতার বচন দ্বারা সিদ্ধান্ত করলেন শূদ্র মন্ত্রসংহিতা বাদে বাকি শাস্ত্র পড়বে→ স্বমত স্থাপন করলেন যে মন্ত্রসংহিতা ছাড়া বাকি শাস্ত্র বেদ নয়→ তাহলে যজুর্বেদ ২৬/২ দ্বারা কি করে বললেন যে শূদ্রও বেদ পড়তে পারবেন?

অতএব, দয়ানন্দকে শূদ্রবিরোধী বলবেন কিনা তা পাঠকগণ বিবেচনা করুন, কিন্তু তিনি যে স্ববিরোধী তা প্রমাণ হয়ে গেল ৷ তার এইরুপ স্ববিরোধীতার প্রমাণ আরো আছে, ক্রমে ক্রমে সেগুলো প্রকাশ করা হবে ৷ অনুসন্ধান করুন- কিভাবে দয়ানন্দ এরকম স্ববিরোধী প্রলাপ করতে পারে? অনুসন্ধান করলে জানতে পারবেন যে দয়ানন্দ গাঁজা-হুঁকো সেবন করতেন ৷ এইরকম স্ববিরোধিতা নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি ছাড়া আর কে করতে পারে?



1 টি মন্তব্য:

  1. বেদের চার ভাগ সংহিতা ,আরণ্যক , ব্রাহ্মণ , উপনিষদ। এর মধ্যে সংহিতার দুই ভাগ মন্ত্র এবং আশীর্বচন।
    এবার বুঝুন মন্ত্র সংহিতা কি?

    আর শুদ্র তো সবাই , জন্মগত সবাই শুদ্র। যতক্ষণ না সঠিক শিক্ষা পায়। তার মধ্যে যে যে কাজটা করবে সে সেই বর্ণ। এবার তবুও বলা হয়েছে পড়ানো যাবে। এতে শুদ্র বিরোধ কেমন হল বোঝা গেল না। কারণ আর্য সমাজের পুরোহিতরা বা তথাকথিত শুদ্রও হয়।
    এটা মিথ্যাচার করলেন আপনি।

    উত্তরমুছুন

সাম্প্রতিক পোস্ট

পুরুষ—কৃষ্ণ ৷৷ প্রকৃতি—রাধা

 পুরুষ—কৃষ্ণ ৷৷ প্রকৃতি—রাধা ======================= যোগেনাত্মা সৃষ্টিবিধৌ দ্বিধারূপো বভূব সঃ ৷ পুমাংশ্চ দক্ষিণার্ধাঙ্গো বামাঙ্গঃ প্রকৃতিঃস্...

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ