আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা ‘স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী’, এই নাম হয় সন্ন্যাস গ্রহণের পরে, কিন্তু এর আগে তার কি নাম ছিল এবং তার পিতা-মাতার নাম কি দয়ানন্দ কখনো তা কারো কাছে বলেন নাই ৷ দয়ানন্দ নিজেকে ব্রাহ্মণ ঘরের সন্তান বলে দাবি করতেন, কিন্তু তিনি এমন কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেননি যাতে তার কথা সত্য প্রমাণিত হয় ৷
দয়ানন্দ যখন বালক ছিলেন তখন তিনি একদিন তার পিতার সাথে শিবরাত্রি যাপন করছিলেন ৷ দয়ানন্দ দেখলেন যে কতগুলি ইঁদুর শিবমূর্তির গাত্র বেয়ে বেড়াচ্ছে ৷ তখন তিনি তার পিতাকে ডাকলেন, পিতা ইঁদুরগুলিকে তাড়িয়ে দিলেন ৷ দয়ানন্দ ভাবলেন- শিব যদি সর্বশক্তিমান ভগবান হন তবে ইঁদুরগুলো তিনি নিজে তাড়াতে পারলেন না কেন? এ ঘটনার পর থেকে তিনি মূর্তিপূজার প্রতি শ্রদ্ধাহীন হন ৷
(ভাবুন কান্ড, দয়ানন্দ আশা করেছিল ইঁদুর মারতে স্বয়ং ভগবান শিব ত্রিশুল হাতে হাজির হবেন!!! কিন্তু দয়ান্দের এ ভাবনা আসল না যে ভগবান কেন তাঁরই সৃষ্ট অবুঝ জীবকে অযথা মারতে যাবেন; বালক দয়ানন্দ যদি তার পিতার কাঁধে চড়ে উঠতো তবে কি তার পিতা তাকে ছুড়ে ফেলে দিতেন?? বরঞ্চ অবুঝ ছেলেকে আদরই কি করতেন না?)
এরপর দয়ানন্দ যখন যুবক, পিতা যখন দয়ানন্দের বিবাহের সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছেন, তখন তিনি বাড়ি হতে পলায়ন করেন ৷
(যে মেয়েটির সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল তার কি দশা হয়েছিল?)
পলাতক দয়ানন্দ একদিন সকালে সিদ্ধপুরের নীলকন্ঠ মন্দিরে অবস্থান করছিলেন ৷ দয়ানন্দের পিতা এক বৈরাগীর কাছ থেকে দয়ানন্দের খবর পেয়ে সেই সময় সিপাহীসহ দয়ানন্দকে ধরতে আসলেন ৷ তখন দয়ানন্দ পিতার হাতে মার খাওয়ার ভয়ে মিথ্যা কথা বলেন যে তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি হতে পলায়ন করেন নাই, কোন অসৎ ব্যক্তির পরামর্শে এইকাজ করেছেন এবং তিনি এখন অনুতপ্ত ও বাড়ি ফেরার কথাই ভাবছিলেন ৷
(অর্থাৎ সত্য কথা বলার মতো অকুতোভয়ী তিনি ছিলেন না, আর সেই দয়ানন্দই যদি লেখেন ‘সত্যার্থ-প্রকাশ’ তাতে কতটা মিথ্যা থাকতে পারে তা একবার ভেবে দেখুন)
দয়ানন্দের প্রতি তার পিতার কোন আস্থা-বিশ্বাস ছিলনা, কেননা বিশ্বাস করার যোগ্য সন্তান তিনি জন্ম দেন নাই ৷ তাই তিনি দয়ানন্দকে নজরে রাখার জন্য দয়ানন্দের সাথে সিপাহী নিযুক্ত করে দিলেন ৷ এদিকে দয়ানন্দ আবার পালানোর কৌশল খুজতে লাগল ৷ একদিন রাতে দয়ানন্দ ঘুমানোর ভান করে শুয়ে আছেন, সিপাহীরা ভাবল দয়ানন্দ ঘুমিয়ে পরেছে ৷ তাই তারাও ঘুমাতে গেল ৷ এই সুযোগে সিপাহীদের ধোকা দিয়ে তিনি আবার বাড়ি হতে পলায়ন করলো ৷
(সত্যার্থ-প্রকাশ গ্রন্থেও তিনি শাস্ত্রবাক্য নিয়ে ধোকাবাজী করেছেন, কিন্তু দয়ানন্দ অনুরাগীরা তা বুঝতে পারে না)
এরপর তিনি বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকেন, তো দয়ানন্দ মহাশয় যখন চন্ডালগড়ে অবস্থান করছিলেন তখন তিনি সিদ্ধিপানে অভ্যস্ত হয়েছিলেন ৷ একদিন তিনি চন্ডালগড়ের একটি শিবমন্দিরে রাত যাপনের উদ্দেশ্য উপস্থিত হলেন ৷ সিদ্ধির নেশার ঘোরে তিনি মন্দিরে গভীর নিদ্রায় ডুবে গেলেন ৷ তিনি তখন একটি স্বপ্ন দেখলেন ৷ কি স্বপ্ন জানেন? স্বপ্ন দেখলেন যে, মহাদেব ও পার্বতী দয়ানন্দের বিবাহ নিয়ে আলোচনা করছেন 😁 ৷
(পাঠক লক্ষ্য করুন, দয়ানন্দ কলির প্রভাবে পরে মূর্তিপূজা খন্ডন করার চেষ্টা করেছে আজীবন, আর যখন প্রয়োজন পরেছে তখন কিনা নিজেই মন্দিরের আশ্রয় নিয়েছে? এ কেমন দ্বিচারিতা? এ কেমন শঠতা?)
শুধু সিদ্ধি বা গাঁজাই তিনি টানেনি, তিনি হুকোও টেনেছিলেন খুব ৷ হুকো তার খুব প্রিয় ছিল ৷
দয়ানন্দ সরস্বতী মূর্তিপূজার প্রতি অবিশ্বাসী ছিলেন, ঈশ্বরের অবতার মানতেন না, শিব-রাম-কৃষ্ণকে কেবল সাধারণ মানুষ মনে করতেন ৷ তিনি এসকল বিষয়ে যখন বিভিন্নস্থানে ভাষণ দিতেন তখন শ্রোতারা তার ভাষণ শুনে ইট-পাটকেল-জুতো ছুড়ে মারত ৷
তো শেষমেশ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী কি উপাধি অর্জন করেছিল জানেন? তার উপাধি ছিল ‘কোলাহল-স্বামী’ ৷ কারণ যেখানেই যেতেন তিনি নিজেই কোলাহল জুড়ে দিতেন এবং বিরোধীপক্ষের যুক্তিতে না পেরে দিলে তাদের যুক্তিকে তিনি স্বয়ং কোলাহল আখ্যা দিতেন ৷
তার জীবনের শেষ পরিণিতি খুবই কষ্টদায়ক ছিলো ৷ তিনি বেগম নান্নিজান নামক এক মুসলিম মহিলার হাতে বিষ খেয়ে বহুদিন যাবৎ ভুগতে ভুগতে মারা যান ৷ ঈশ্বর কেন তাকে এমন যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু দিলেন?
[যে দুটি বইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে পোস্টটি লেখা হয়েছে—
i) দয়ানন্দ-চরিত, শ্রীদেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
ii) Life &Teachings Of Swami Dayananda by Vishwa Prakash]
==============================
আপডেটঃ শ্রীদেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় প্রণীত ‘দয়ানন্দচরিত’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠাঃ ৫৬, ৭৭) আর্যসমাজের ধর্মগুরু স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর সিদ্ধি পান বা গঞ্জিকা সেবনের উল্লেখ পাওয়া যায় ৷ এই তথ্য যখন দয়ানন্দপ্রেমী আর্যসমাজীদের সম্মুখে উপস্থাপন করা হয় তখন তারা গুরুর দোষ ঢাকতে গিয়ে বলে দয়ানন্দের তখন বৈদিক দীক্ষা হয়নি, তার সন্ন্যাস গ্রহণ হয়নি, তখন দয়ানন্দ অল্পবুদ্ধি বালকমাত্র ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি ৷ এসব সম্পূর্ণ মিথ্যাচার মাত্র ৷ দয়ানন্দ সন্ন্যাস গ্রহণের পরই খাঁজা টেনেছিল ৷ দয়ানন্দের বয়স যখন তেইশ কিংবা চব্বিশ বছর তখন তিনি চানোদ-কল্যানী নামক স্থানের অদূরস্থিত পূর্ণানন্দ স্বামীর নিকট দীক্ষা গ্রহণপূর্বক সন্ন্যাসাশ্রমে প্রবিষ্ট হন ৷ তারপর সেখান হতে নানা স্থানে ভ্রমণ করে হরিদ্বারের কুম্ভমেলায় যান ৷ হরিদ্বার হতে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণপূর্বক শেষমেশ চন্ডালগড়ে এসে খাঁজা টানার অবকাশ পান ৷
এরপর দয়ানন্দপ্রেমীগণ তাদের গুরুর দোষ ঢাকতে গিয়ে বলে যে- ওসব সঙ্গদোষে হয়েছে ৷ অর্থাৎ যত দোষ নন্দঘোষ!!
তা গাঁজা না হয় সঙ্গদোষে টেনেছিল কিন্তু দয়ানন্দ তার পরিণত বয়সেও হুকো টানত কোন দোষে? শাক দিয়ে মাছ আর কত ঢাকবেন? আর্যসমাজ নয়াবাস দিল্লী হতে প্রকাশিত ‘মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী কা জীবন চরিত্র’ নামক হিন্দী গ্রন্থের ৩০২ পৃষ্ঠায় দয়ানন্দের মৃত্যুর ছয় বছর পূর্বেও তার হুকো টানার নির্দশন পাওয়া যায় ৷ এছাড়া উক্ত বইয়ের ৯১১ পৃষ্ঠায় লিখিত আছে যে, দয়ানন্দ ভোজন শেষে পান খেতেন ৷ 😊 ৷
জয় জয় দয়ানন্দ সরস্বতীর জয়!
তো তাতে কি হয়েছে?এই গাঞ্জা খাবার ফলে পরম সত্য জানতে পেরেছেন।তাই মশাই আপনিও গাঞ্জা খান আর আর্য সমাজে যোগ দিন।
উত্তরমুছুনআপনারা এত কিছু করেও মানুষকে বেদের কাছে আনতে পারলে
উত্তরমুছুনন না। আর দয়ানন্দ সরস্বতী পেরেছিলেন।
দয়ানন্দ পেরেছিলো
মুছুনআপনাকে ১১ নিয়োগী সন্তান বানাতে
এইরকম আরও পোস্ট চাই
উত্তরমুছুন